“নারীর জন্য রাজনীতি করি, সহিংসতা রোধে একসাথে লড়ি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ভোলায় নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ভোলা সরকারি কলেজের সামনে দুর্বার নেটওয়ার্ক ভোলা ও নারীপক্ষ যৌথভাবে দিবসটি উপলক্ষে মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, নারী অধিকার কর্মী এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে “নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও একসাথে” সহ নানা শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে তরুণ-তরুনীরা অংশগ্রহণ করেন। পরে লিফলেট বিতরণ শেষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী বিলকিস জাহান মুনমুন, তরুণ সংগঠক মোহাম্মদ অনিক, তাওহীদ, সাহিদ হোসেন দীপুসহ আরও অনেকে।
এ সময় বক্তারা বলেন, পরিবারে, সমাজে, রাস্তাঘাটে, কর্মস্থলে, প্রতিষ্ঠানে, যানবাহনে—দিনে বা রাতে, শিশু থেকে বৃদ্ধ, অতি গরীব থেকে অতি ধনী, যেকোনও শ্রেণি, ধর্ম বা জাতি-গোষ্ঠী, গৃহিনীসহ যেকোনও পেশার নারীই চরম নিগ্রহ ও নির্যাতনের শিকার হয়। এর মূলে রয়েছে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে নারী-পুরুষের মধ্যকার বৈষম্য এবং সর্বত্র নারীকে অধস্তন করে রাখার নীতি ও চর্চা। রাজনীতিতেও এর ব্যতিক্রম নয়। নারীর উপর সহিংসতা বা নির্যাতনও এর একটি কারণ।
বক্তারা আরও বলেন, নারীর প্রতি নির্যাতন তখনই কমবে যখন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে আইনগুলো যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে। তাহলেই নারী নির্যাতন কমবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর ডোমিনিক্যান রিপাবলিকের স্বৈরাচারী সরকার বিরোধী মিরাবেল ভগ্নিত্রয়কে সেনা সদস্য দ্বারা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করে, ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকান ও ক্যারিবিয়ান নারী সম্মেলন ২৫ নভেম্বরকে “নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস” ঘোষণা করে।
এর লক্ষ্য ছিল নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা। এই লক্ষ্যে ১৯৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর উইমেন্স গ্লোবাল লিডারশীপের এক প্রশিক্ষণে ২৩টি দেশ থেকে আগত অংশগ্রহণকারীগণ “নারী নির্যাতন মানবাধিকার লঙ্ঘন” এই ঘোষণার ভিত্তিতে ২৫ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ‘মানবাধিকার দিবস’ পর্যন্ত নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তাব করেন।
এই ডাকে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার সংগঠন ১৬ দিনব্যাপী নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অভিযানে অংশগ্রহণ করে আসছে। বাংলাদেশে ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস উদ্যাপন কমিটি’ ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতিবছর একেকটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালন করে আসছে।
সাননিউজ/আরপি