ধান সংরক্ষণের বড় পাত্র বাঁশের তৈরি ডুলি বা গোলা। যা কিশোরগঞ্জ জেলাসহ কটিয়াদীর বিভিন্ন জায়গায় ডুলি বা গোলা কিংবা মাচা নামেও পরিচিত। যা তৈরি হয় একমাত্র বাঁশ দিয়ে। গ্রামের গৃহস্থ পরিবার এ গোলায় ধান সংরক্ষণ করেন। সারা বছর ধান সংরক্ষণ করতে গোলা খুবই উপযোগী। কিন্তু দিন দিন ধান সংরক্ষণের এ গোলা কালের গহব্বরে হারিয়ে যাচ্ছে।
ধানের মৌসুমে ধান কেটে শুকিয়ে গোলাজাত করা হয়। প্রয়োজনের সময় ধান এই গোলা থেকে বের করে পুনরায় শুকিয়ে ভাঙ্গানো হয়। তবে ধান বিক্রি করার জন্য নতুন করে আবার ধান শুকানোর প্রয়োজন পড়ে না। এক সময় ডুলি ভর্তি দান না থাকলে গ্রামের গৃহস্থ পরিবার সেই বাড়িতে মেয়ে বা ছেলে বিয়ে করাতে আগ্রহী হতেন না। এ প্রচলিত কথাটি এখনো গ্রামাঞ্চলের মানুষের মুখে মুখে। আগেকার সমাজব্যবস্থা এখনকার মত এত উন্নত ছিল না। তখন চোর, ডাকাতির ভয়ে গোলায় ধানের ভিতরে গৃহস্হ্রা স্বর্ণ বা টাকা পয়সা লুকিয়ে রাখত।
ধান সংরক্ষণের এ পাত্রকে গোলা বা ডুলি আখ্যায়িত করার কারণও রয়েছে। গোলা বা ডুলি বাঁশের তৈরি হলেও অপেক্ষাকৃত মজবুত যা দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে বাঁশের তৈরি গোলা ব্যবহার দিন দিন কমে যাচ্ছে। কারণ বাঁশের উৎপাদন কমে যাওয়া এবং মূল্য বৃদ্ধির কারণে ডুলি বা গোলা তৈরিতে খরচ বেড়ে গেছে। বর্তমানে বাঁশের তৈরি গোলা বা ডুলির স্থান দখল করে নিয়েছে স্থায়ী পাকা অথবা টিন দিয়ে তৈরি গোলা। এই গোলা বা ডুলি বাইরে রাখা যায় বলে, ঘরের ভিতর জায়গা অনেক খোলামেলা থাকে।
সাননিউজ/ইউকে