শিল্প ও সাহিত্য

মুখ ও মুখোশের প্রধান নায়িকা

লিয়াকত হোসেন খোকন:

বাংলাদেশের প্রথম সিনেমা ‘মুখ ও মুখোশ’র প্রধান নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্ত। নায়িকা হিসেবে এটিই তার প্রথম এবং শেষ ছবি। পরবর্তীতে অবশ্য চরিত্রাভিনেত্রী হিসেবে ‘হাম সফর’ আর ‘সোনার কাজল’ ছবিতে অভিনয় করেন ১৯৬২ সালে। পূর্ণিমা সেন গুপ্তর জন্ম ১৯৩০ সালে আসামের গৌহাটি শহরে। শৈশবের কিছুদিন তার সেখানেই কেটেছিলো। পরে চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় তার পৈতৃক বাড়িতে চলে আসেন।

চট্টগ্রামে এসেই বাবা-মায়ের উৎসাহে তিনি নাচগান শেখা শুরু করেন। প্রথমদিকে তিনি নৃত্যশিল্পী হিসেবে খুব নাম করেন। বড়-বড় সওদাগর পূর্ণিমার নাচ দেখার জন্য রাতের পর রাত বিনিদ্র রজনী কাটাতেন তখন। সবারই অপেক্ষা ছিলো কখন পূর্ণিমা স্টেজে আসবেন আর কখনই বা নাচ শুরু করবেন। নাচের পাশাপাশি এক সময় তিনি মঞ্চে অভিনয়ও শুরু করেন।

১৯৪৪ সাল থেকেই তিনি মঞ্চে নায়িকা হিসেবে অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেন। সেইসময় তিনি মলিনা দেবী, রানীবালা, উমাশশী, প্রমিলা ত্রিবেদী, সাধনা বসু, লীলা দেশাইসহ অন্যান্য অভিনেত্রীদের ছবি দেখে দেখে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন, কি করে ফিল্মের নায়িকা হওয়া যায়। কোলকাতা বহু দূরে, তাই সেখানে যাওয়া সম্ভব হলো না। চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় অবস্থান করেই মঞ্চে একের পর এক নাটকে অভিনয় করে গেলেন।

সে সময় তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো ছিলো নবাব সিরাজ উদ-দৌলা, শাজাহান, চন্দ্রগুপ্ত, নন্দলাল, গুনাইবিবি, বেদের মেয়ে, বিষ্ণুপ্রিয়া, রাধাকৃষ্ণ, আলোমতি, ভেলুয়া সুন্দরী, কমলার বনবাস, মহুয়া, চাঁদ সওদাগর, গরিবের মেয়ে, চণ্ডীদাস প্রভৃতি। থিয়েটারের এসব নাটকে পূর্ণিমাই ছিলেন নায়িকা। ১৯৫৪ সালের কথা। ইত্তেহাদ পত্রিকায় ছাপা হলো ‘খান জামান শিগগিরই ঢাকায় চলচ্চিত্র নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

নায়িকার জন্য কয়েকটি মুখ চাই।’ বিজ্ঞাপন পড়ে পূর্ণিমা খামের ভেতর ছবি ও চিঠি ভরে পাঠিয়ে দিলেন ঢাকায় আবদুল জব্বার খানের ঠিকানায়। ছবিটা দেখে আবদুল জব্বার খান পূর্ণিমা সেনগুপ্তাকে পছন্দ করলেন। তৎক্ষণাৎ চিঠি লিখে দিলেন দেখা করার জন্য। একদিন পূর্ণিমা সেনগুপ্ত এসে উপস্থিত হলেন আবদুল জব্বার খানের সামনে। উপস্থিত সবাই পূর্ণিমাকে দেখে মুগ্ধ হলেন। এভাবেই পূর্ণিমা সেন ঢাকার প্রথম সবাক ছবি ‘মুখ ও মুখোশ’র নায়িকা হয়ে গেলেন।

পূর্ণিমার জীবন কাহিনী চমকপ্রদ। ১৯৬২ সালে তিনি চিত্র প্রযোজক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নাছিরকে বিয়ে করে চিত্রজগত থেকে দূরে সরে যান। নাছিরকে বিয়ে করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে পূর্ণিমা সেনগুপ্ত থেকে হলেন পারভীন বানু। ১৯৭১ সালে বড় ছেলে বাবলা মারা যাওয়ায় অনেকটা ভেঙে পড়লেন।

স্বামী নাছির তাকে ছেড়ে বিদেশে চলে যাওয়ায় সংসারের পুরো দায়িত্ব পূর্ণিমার ওপর পড়েছিলো। নিজের চেষ্টায় ছেলেমেয়েদের তিনি প্রতিষ্ঠিত করে ছিলেন। তারই মেয়ে নাসরিন একসময় ফিল্মের নায়িকা হয়েছিলেন। শেষ জীবনটা তার কেটেছিলো নাসরিনের বাসায়। তার মেয়ে নাসরিন চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন ও পরে প্রখ্যাত চিত্রনায়ক জসিমকে বিয়ে করেন।

সাননিউজ/এএসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কেউ বাধা দিতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশের জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন কোনো শক্তিই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে প...

ডাকাতির প্রস্তুতিকালে শ্রমিক লীগ নেতাসহ ৩ জন গ্রেপ্তার

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ শ্রমিক লী...

বোয়ালমারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় বৃদ্ধ নিহত

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ট্রলির ধাক্কায় কুদ্দুস ফকির (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়...

২৩ মামলার আসামি লালুসহ ৩ সহযোগী আটক

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী, চারটি হত্যাসহ ২৩ মামলার আসামি...

কভার্ড ভ্যান–বাসের মাঝে পিষে মোটরসাইকেল চালক নিহত

ঝালকাঠি বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় বাস ও কভার্ড ভ্য...

খেলতে গিয়ে সৌরবিদ্যুতের তারে গলায় ফাঁস, শিশুর মৃত্যু

ঝালকাঠির রাজাপুরে সৌরবিদ্যুতের তারে গলায় ফাঁস লেগে সাফওয়ান নামে ৪ বছরের এক শি...

কভার্ড ভ্যান–বাসের মাঝে পিষে মোটরসাইকেল চালক নিহত

ঝালকাঠি বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় বাস ও কভার্ড ভ্য...

সাংবাদিকসহ ৪ পরিবারকে অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগ

মাদারীপুরে মাহবুবুর রহমান বাদল নামের এক সিনিয়র সাংবাদিককে ১৫ দিন ধরে অবরুদ্ধ...

জনগণ নির্বাচনমুখী হলে কেউ বাধা দিতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশের জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন কোনো শক্তিই নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে প...

ভারতের জার্সি গায়ে পাকিস্তানি খেলোয়াড়, ফেডারেশনের জরুরি সভা

পাকিস্তানের একজন কাবাডি খেলোয়াড় বাহরাইনের একটি টুর্নামেন্টে ভারতের জার্সি গায়...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা