যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের একবার নারী সাংবাদিককে ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার করেছেন। এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনের সহলেখক কেটি রজার্স। গত বুধবার ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ একটি পোস্টে রজার্সকে ‘কুৎসিত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এর আগের দুই সপ্তাহে তিনি আরেক নারী সাংবাদিককে ‘চুপ করো, পিগি’ বলে ধমক দিয়েছিলেন।
নিউইয়র্ক টাইমস সম্প্রতি ট্রাম্পের বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে তথ্যভিত্তিক একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে সহলেখক ছিলেন ডিলান ফ্রেডম্যান এবং কেটি রজার্স। ট্রাম্প ডিলানের নাম উল্লেখ না করলেও কেটিকে ব্যক্তিগতভাবে লক্ষ্য করে কটূক্তি করেছেন। তিনি লিখেছেন, “কেটি রজার্সকে নিয়োগই দেওয়া হয়েছে আমার সম্পর্কে কেবল বাজে কথা লেখার জন্য। সে একজন তৃতীয় শ্রেণির সাংবাদিক; ভেতর ও বাইর—উভয় দিক থেকেই কুৎসিত।”
ট্রাম্পের পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই বছর তিনি কতটা কঠোর পরিশ্রম করেছেন এবং জনমত জরিপে সর্বকালের সেরা অবস্থানে আছেন। যদিও সত্যিকারভাবে তাঁর সমর্থন দ্বিতীয় মেয়াদে সর্বোচ্চ অবস্থানের তুলনায় কমেছে। তিনি নিজস্ব স্বাস্থ্য ও কগনিটিভ টেস্টে সফলতার দাবিও করেছেন, যদিও এমআরআই স্ক্যানের কারণ জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।
এই কটূক্তির পর নিউইয়র্ক টাইমসের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়া আসে। পত্রিকার মুখপাত্র বলেন, “প্রতিবেদনটি নির্ভুল এবং তথ্যভিত্তিক। ব্যক্তিগত আক্রমণ বা বাজে নাম কিছুই সত্যকে বদলাতে পারবে না। ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আমাদের সাংবাদিকেরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।” তারা কেটি রজার্সকে দক্ষ ও নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং স্বাধীন গণমাধ্যমের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
ট্রাম্পের এই কুরুচিকর মন্তব্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের মানহানি মামলা নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে শক্ত ভিত্তি ছাড়া এবং আদালতে খারিজ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট দাবি করেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন সব সময় খোলামেলা ও স্বচ্ছ।
এই ঘটনা নারী সাংবাদিকদের প্রতি ট্রাম্পের বারংবার কটূক্তি ও জেন্ডার-সংবেদনশীল আচরণ নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ ও প্রতিবেদন তৈরিতে বিন্দুমাত্র পিছপা হবেন না, এবং এটি একটি স্বাধীন গণমাধ্যমের মৌলিক দায়িত্ব।
সাননিউজ/এও