ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়

আজ মহান বিজয় দিবস

নিজস্ব প্রতিবেদক: নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে স্বাধীন হয় লাল-সবুজের বাংলাদেশ। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের এ দিনে এসেছে প্রার্থীত বিজয়। আজ বাঙালি জাতির সেই মহান বিজয় দিবস।

আরও পড়ুন: বিজয় মিছিলে নির্বাচনবিরোধী কর্মকাণ্ড নয়

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হওয়া স্বাধীনতার লড়াই পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এ দিনে বাংলার মানুষের কাছে বিজয়ের পূর্ণতায় ধরা দেয়। সে বছরের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেছিলেন।

পরে দখলদার বাহিনী এ দিনে যৌথবাহিনীর (মুক্তিবাহিনী ও ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের) কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়েছিল। সেদিন ঢাকার কেন্দ্রস্থল রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানের পক্ষে আত্মসমর্পণের দলিলে সই করেন জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজি।

আরও পড়ুন: ইতিহাসের এই দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত

তিনি যৌথবাহিনীর প্রধান জেনারেল জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিবাহিনীর উপ-সর্বাধিনায়ক ও ডেপুটি চিফ অব স্টাফ গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবদুল করিম খোন্দকার।

তারপর রাজনৈতিক নানা চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে এগিয়েছে এ দেশ। তবে কাঙ্খিত অর্থনৈতিক মুক্তি, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার মতো বিষয়গুলো এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। অসংযত রাজনৈতিক সংস্কৃতি মাঝে মাঝেই জনজীবনে বিভীষিকা ছড়ায়।

শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনে এবার জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: বোয়ালমারী থানাকে দালালমুক্ত করার ঘোষণা

আজ প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে দেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিইসির বৈঠক কাল

আজ সরকারি ছুটির দিন। এ দিন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে।

সেই সাথে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপে জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।

বিজয় দিবসে জাতীয় পর্যায় এবং জেলা ও উপজেলায় জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন: ঢাকা-চেন্নাই রুটে ফ্লাইট চালু

এছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে এবং এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু বিকাশ কেন্দ্রসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।

আরও পড়ুন: আজও ঢাকার বায়ু ‘দুর্যোগপূর্ণ’

দেশের সব শিশু পার্ক ও জাদুঘরগুলোতে বিনা টিকিটে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এবং সিনেমা হলে বিনামূল্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হবে। এ দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভ ও ভূগর্ভস্থ জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্যভিত্তিক প্রামাণ্য চিত্র ও পোস্টার প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ১

বাণীতে রাষ্ট্রপতি সকলকে বিজয়ের শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এ জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা। এ অর্জনের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ শোষণ-বঞ্চনা, রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের করুণ ইতিহাস।

৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে স্বপ্নযাত্রা শুরু হয়েছিল, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম ও নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে তা পূর্ণতা পায়।

তার নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনায় হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে প্রাণ গেল ২ জনের

দেশ আজ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ পরিপূর্ণতা দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ঘোষণা করা হয়েছে রূপকল্প-২০৪১।

সরকারের জনকল্যাণমুখী কর্মসূচির ফলে নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত রয়েছে।

আরও পড়ুন: সবাইকে ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে

করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠার আগেই ভূ-রাজনৈতিক সংকটের ফলে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও মূল্যস্ফীতির সংকট মোকাবিলায় সরকার সাশ্রয়ী নীতি গ্রহণ, বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্রদানসহ ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে আমরা এ সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো। এজন্য সকলের সহযোগিতার পাশাপাশি দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক মতভেদ যাতে উন্নয়ন ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত না করে, সেদিকে সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে গত ১৫ বছর ধরে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা আজ জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করছি।

আরও পড়ুন: স্মৃতিসৌধে ইসলামী ব্যাংকের পুষ্পস্তবক অর্পণ

আজ খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা এখন পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছি। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করেন। আমরা মাতৃভূমিকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নিয়ে গেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর বিগত ৫২ বছরে আমাদের যা কিছু অর্জন তা, জাতির পিতা এবং আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশে পরিণত হবে।

আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে ইসলামী ব্যাংকের আলোচনা অনুষ্ঠান

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এ অর্জনকে অর্থবহ করতে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সবাইকে জানতে ও জানাতে হবে।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমরা পৌঁছে দিবো- আজ বিজয় দিবসে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভালুকায় ভারতীয় চিনিসহ গ্রেফতার ২

ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকায় তীর কোম্পানি...

বোয়ালমারীতে বজ্রপাতে আহত ৮

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে প...

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠিত

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অত...

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক : আসন্ন বিশ্বকাপের প্রস্তুতি...

গজারিয়ায় পুলিশ-সাংবাদিককে মারধর

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: উপজে...

বিএনপির নির্বাচন বর্জন আত্মহননমূলক

নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো বিএনপির...

ফের লন্ডন মাতাবেন জেমস

বিনোদন ডেস্ক: রক লিজেন্ড মাহফুজ আ...

ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়াল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডলারের দাম এক লাফে ৭ টাকা বা‌ড়িয়ে ১১...

রংপুরে নিম্নমানের স্যালাইনে বাজার সয়লাভ 

রংপুর ব্যুরো: সারা দেশের মতো রংপু...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা