নিজস্ব প্রতিবেদক: পদ আছে লোকবল নেই। আবার পদ আছে কাজ নেই এমন সব সরকারি পদ বাতিল করা হয়েছে। অষ্টম জাতীয় পে-স্কেলের ১ম থেকে ২০তম গ্রেডভুক্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ সংস্থার এমন ৪২ হাজার ২৯৮ পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
এসব পদ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার জনবল কাঠামোতে থাকলেও দীর্ঘদিন অকার্যকর ছিলো। তাই লোকবল নিয়োগ দেওয়া হতো না। অর্থ মন্ত্রণালয় এসব পদ বিলুপ্তির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বিলুপ্ত করা হয়েছে রেল মন্ত্রণালয়ের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজস্ব খাতের পদ বিলুপ্তির কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অনুবিভাগ।
ব্যয় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শুলেখা রানী বসু বলেন, প্রকল্প শেষে অনেকে আদালত থেকে রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তর নির্দেশ নিয়ে আসেন। এ কারণে তাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটি একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হয়। তাই পূর্বের পদগুলো বিলুপ্ত করে নতুন পদ সৃজন করা হয়।
সূত্র জানায়, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদ বিলুপ্তির মধ্যে ১৮৫ ক্যাডার পদ স্থায়ীভাবে বিলুপ্ত করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্প থেকে আসা ৫ হাজার ২৭৮ পদ অস্থায়ীভাবে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা হয়েছে। ফলে এসব পদ বিলুপ্ত হয়েছে। এছাড়া ১৯৫ রয়েছে অন্যান্য ক্যাডার পদ। বাকি ৩৬ হাজার ৬৪০ পদ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, এক সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অফিস সহায়ক পদ ছিলো। কম্পিউটার অপারেটর পদ পৃথক ছিলো। এখন দুটি পদকে একটি করে অফিস সহায়ক কাম কম্পিউটার অপারেটর করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি অফিসে পিয়ন পদ ছিলো। এখন সেটি তুলে দেওয়া হয়েছে। ফরাস নামে একটি পদ ছিলো। এ পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে সরকারের কিছুটা আর্থিক সাশ্রয় হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, রেলওয়েকে আধুনিক করতে অনেক পদের বিলুপ্তি করা হয়েছে। রেলওয়েতে মুঞ্জরিকৃত ৪০ হাজার ২৭৫ চাকরির পদের বিপরীতে ২৪ হাজার ৫৭৩ জন কাজ করছে।
রেল মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ২০১০ সালে নিয়োগের পর আর নিয়োগ হয়নি। কিন্তু রেলওয়ের সংস্কার প্রকল্প কর্তৃক সুপারিশকৃত ক্যাডার কম্পোজিশন ও অন্যান্য দাপ্তরিক পুনর্গঠনের প্রয়োজন। পাশাপাশি অনুমোদিত কাঠামো মোতাবেক জনবল নিয়োগের দরকার। সে লক্ষ্যে ২০২০ সালের আগস্টে রেলওয়ের বিভিন্ন পদ বিলুপ্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নেওয়া হয়েছে। এখন বিলুপ্ত পদগুলোর বাইরে নতুন পদ সৃজন করে নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পদ বিলুপ্তির আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিলুপ্তিযোগ্য পদ শনাক্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে সেটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়। সেখান থেকে অর্থ বিভাগে প্রেরণ করা হয়। অর্থ বিভাগ সেটি ব্যয় ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের অনুবিভাগের কাছে পাঠায়। সেখানের সম্মতি পাওয়ার পর সুপারিশের জন্য পাঠানো হয় প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির কাছে। এরপর প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক জিও প্রস্তুত করে কার্যকরের জন্য পাঠানো হয় অর্থ বিভাগে।
সান নিউজ/এফএআর