নিজস্ব প্রতিবেদ: ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সামরিক আদালতের বিচারের মাধ্যমে দণ্ড পাওয়া সেনা ও বিমানবাহিনীর সামরিক সদস্য ও স্বজন হারানো নূরে আলম বলেন, ‘বাবা ছিলেন বিমানবাহিনীর সার্জেন্ট দেলোয়ার হোসেন। তখন আমার এক বছর বয়স। বাবার বয়স ৩০ বছর ছিল। ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবরের পর বাবার আর খোঁজ পাইনি। কেবল একটি চিঠি পেয়েছি। তাতে লেখা, তিনি দোষী সাব্যস্ত, তাঁর কাপড়চোপড়গুলো আমরা যেন নিয়ে যাই।’
শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের নিচতলার মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কেন্দ্রীয় কমান্ড। ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সামরিক আদালতের বিচারের মাধ্যমে দণ্ড পাওয়া সেনা ও বিমানবাহিনীর সামরিক সদস্য ও স্বজন হারানো পরিবারের সদস্য তারা।
অনুষ্ঠান থেকে সাত দফা দাবি জানানো হয়। অন্যতম দাবিগুলো হলো ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ফাঁসি, কারাদণ্ড ও চাকরিচ্যুত সেনা এবং বিমানবাহিনীর সদস্যদের তালিকা করা, তাদের নির্দোষ ঘোষণা করা, তাদের প্রত্যেককে সর্বোচ্চ র্যাঙ্কে পদোন্নতি দেখিয়ে বেতন–ভাতা, পেনশনসহ সব সরকারি সুযোগ দেওয়া এবং ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের শহীদ ঘোষণা করা।
অনুষ্ঠানে নূরে আলম আরো বলেন, ‘সেদিন কী হয়েছিল, কেন তাঁদের হত্যা করা হয়েছিল, তাঁদের দোষ বা অপরাধ কী ছিল, সন্তান হিসেবে আমি জানতে চাই। বাবাকে কোথায় কবর দেওয়া হলো—তা আমরা এখনো জানতে চাই।’
সৈয়দ কামরুজ্জামানের বলেন, ‘সারা রাত বিমানবন্দরে ডিউটি করে সেদিন সকালে আমি ব্যারাকে ফিরছিলাম। আমাকে চেয়ারবাড়ি থেকে হুট করে ধরে নিয়ে যায়। তারপর ১০ অক্টোবরে সামরিক আদালতে আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।’
সৈয়দ কামরুজ্জামান আরও বলেন, ‘পরে ১৯৮৪ সালের জুলাই মাসে রাষ্ট্রপতির আদেশে আমার মুক্তি হয়। অথচ আজও আমি জানি না, আমার কী অপরাধ ছিল। আমি এ ঘটনায় জিয়াউর রহমানের বিচার চাই।’
অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ওই সামরিক আদালতের বিচারের ঘটনায় ফাঁসি হয়েছে আগে। ফাঁসি দেওয়ার পর রায় দেওয়া হয়েছে। অথচ এমন নজির বিশ্বের কোথাও নেই। জিয়াউর রহমানের মৃত্যু–পরবর্তী ফাঁসির দাবি জানান তিনি।
সান নিউজ/এমকেএইচ