জাতীয়
প্রতিরোধে পদক্ষেপ নেই

পানিতে ডুবে ১৯ মাসে মৃত্যু দেড় হাজার

সান নিউজ ডেস্ক: গত ১৯ মাসে ১ হাজার ৫১২ জন পানিতে ডুবে মারা গেছেন বলে গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর নামে একটি এনজিওর এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। -সূত্র: বিবিসি

এদের মধ্যে ১ হাজার ৩৩২ জন পানিতে পড়ে মারা গেছেন। বাকিদের মৃত্যু হয়েছে বিভিন্ন নৌযান দুর্ঘটনায়। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের ২৩ জুলাই পর্যন্ত সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই তথ্য তুলে ধরা হয়।

এই সময়ের মধ্যে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে কুড়িগ্রাম জেলায়। প্রায় ৬৩ জনের মতো। বর্ষা এলেই এই দুর্ঘটনার হার যেন বেড়ে যায়। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ওই অঞ্চলে প্রলম্বিত বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণেই এতো পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া বাংলাদেশ হেলথ অ্যান্ড ইনজুরি সার্ভের সবশেষ প্রতিবেদনেও দেখা গেছে, বাংলাদেশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুর তিন নম্বর কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া। তবে শিশু মৃত্যুর ক্ষেত্রে এখন এটাই প্রধান কারণ। গত ১৯ মাসে যারা মারা গেছেন তাদের ৭০ শতাংশই শিশু।

এছাড়া দ্য সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশে (সিআইপিআরবি) এবং আইসিডিডিআর'বি- এর গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৪০টি শিশু পানিতে ডুবে প্রাণ হারান। যাদের ৩০ জনেরই বয়স পাঁচ বছরের কম।

অন্যদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে পানিতে ডুবে আহত হয় অন্তত এক লাখ শিশু, যাদের মধ্যে ১৩ হাজার পঙ্গু হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশে মানুষের মৃত্যুহার কমাতে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকে এসডিজির অন্তর্ভুক্ত করা হলেও সেখানে পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ গুরুত্ব পায়নি। ফলে অসুস্থতাজনিত কারণে শিশু মৃত্যুর হার কমে গেলেও, পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার আগের মতোই আছে। এ নিয়ে সমষ্টি নামে একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। সেখানকার পরিচালক মীর মাসরুর জামান এ ধরণের মৃত্যুর পেছনে প্রধান কিছু কারণ চিহ্নিত করেন।

তিনি বলেন, শিশুদের ক্ষেত্রে প্রধান কারণ হল দিনের বেলায় একটি সময় তারা বাবা মায়ের তত্ত্বাবধানে থাকে না।

এবং বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকা নদী-নালা, খাল-বিল, ডোবা-পুকুরে বেষ্টিত হওয়ায়, শিশুরা অসাবধানতায় এসব জলাশয়ে ডুবে যায়। অন্যদিকে ছোট বড় সবার ক্ষেত্রেই পানিতে ডুবে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয় সাঁতার শেখার কোন ব্যবস্থা না থাকাকে।

সেইসঙ্গে নৌযান দুর্ঘটনা, বন্যা, জলাবদ্ধতা এবং ধীরগতির উদ্ধার তৎপরতাকেও পানিতে ডুবে মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়।

এক্ষেত্রে শিশুদের দিনের বেলায় তত্ত্বাবধানে রাখতে ডে কেয়ার স্থাপন, জলাশয়ের আশেপাশে বেড়া দেয়ার পাশাপাশি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা স্কুল থেকে শুরু করে কমিউনিটি পর্যায় সাতার শেখা বাধ্যতামূলক করা, সেইসঙ্গে নৌযান চলাচল নিরাপদ করার ওপর জোর দিয়েছেন মি. জামান।

তিনি বলেন, এ নিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা কাজ করছে, কিন্তু সরকার যদি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে কাজ করে তাহলে ওইসব উন্নয়ন সংস্থা চলে গেলে কাজ অব্যাহত থাকবে। মৃত্যু ঠেকানো যাবে।গত এপ্রিলে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং পানিতে ডুবে মৃত্যুকে নীরব মহামারি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

তারপর থেকে এ পর্যন্ত সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। তবে এ নিয়ে ১৬টি দুর্ঘটনাপ্রবণ জেলায় একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে বলে জানান মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নার্গিস খানম। সেখানে মূলত ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ডে কেয়ার সেবা এবং ৬ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের সাতার শেখার আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।

নার্গিস খানম আশা করছেন, অক্টোবর নাগাদ প্রকল্পটি একনেকে পাস হবে। এবং এর ছয় মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। এদিকে, পানিতে ডুবে এই মৃত্যু প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদফতর চার বছর আগে একটি জাতীয় কৌশলের খসড়া করলেও সেটি আজও চূড়ান্ত হয়নি।

সান নিউজ/এমএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

মুশফিক-শান্তর সেঞ্চুরি; গলে বাংলাদেশের দিন

গলে অনেক সুখস্মৃতির পাশাপাশি হতাশার রেকর্ডও আছে বাংলাদেশের। গল টেস্টের প্রথম...

৪৮৪ রানে ২য় দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

মুশফিকুর রহিম আউটের পরপরই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকলো টাইগাররা। শেষ বিকেলে...

এনসিপির কর্মসূচি ঘোষণা; দেশব্যাপী পালনের নির্দেশ

দেশব্যাপী পালনের জন্য এনসিপির কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। জুলাই গণহত্যার বিচার,...

রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম আর নেই

রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম (৯৩) আর বেঁচে নাই। মঙ্গলবার(১৭ জুন) ভোর...

বাংলাদেশের আলিফ এশিয়ান আরচ্যারির ফাইনালে

সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ান কাপ আরচ্যারি স্টেজ-২ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের আলিফ...

৪৮৪ রানে ২য় দিন শেষ করলো বাংলাদেশ

মুশফিকুর রহিম আউটের পরপরই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকলো টাইগাররা। শেষ বিকেলে...

জিআই পণ্য হাড়িভাঙ্গা আম সংগ্রহ উৎসব ২০২৫- এর উদ্বোধন

জিআই পণ্য হাড়িভাঙ্গা আম সংগ্রহ উৎসব ২০২৫ এর উদ্বোধন ও আম চাষীদের সাথে মতবিনিম...

সামরিক হস্তক্ষেপ করলে ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ হবে যুক্তরাষ্ট্রের: খামেনি

ইরান-ইসরাইল সংঘাতে যদি যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করে তবে তাদের ‘অপূরণীয় ক্...

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ আর কতদিন চলতে পারে

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ আর কতদিন চলতে পারে। তেল আবিবের আকাশে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ঠ...

মেটার নতুন সিদ্ধান্ত; ফেসবুকে থাকছে না ভিডিও!

মেটার নতুন সিদ্ধান্ত; ফেসবুকে থাকছে না ভিডিও! ভিডিও কনটেন্টে পরিবর্তন আনছে সা...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা