কারাগারে খালেদা জিয়াকে নির্যাতন করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের দায় রয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘ওনাকে (খালেদা জিয়া) একটি প্রহসনমূলক রায়ে জেলখানায় পাঠিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে যে মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, সেটি যে সম্পূর্ণ সাজানো ও প্রহসনের রায় ছিল, তা সর্বোচ্চ আদালতের আপিল ও রিভিউ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে বারবার বলা হয়েছে, বেগম জিয়াকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে, সেটি ছিল সম্পূর্ণ রংলি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও জিঘাংসাপ্রসূত। কারাগারে তাঁকে বিভিন্ন সময়ে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল, সে কারণে হয়তো আমরা তাঁকে হারাতাম না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বেগম খালেদা জিয়ার এই মৃত্যুর পেছনে ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের অবশ্যই দায় রয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি ইন্তিকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে গণমাধ্যমকে জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, আম্মা আর নেই।
এদিকে বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টেও তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়। পাশাপাশি দলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত শোকবার্তায় বলা হয়, ফজরের নামাজের পর সকাল ছয়টায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেন। তার রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং সবার কাছে দোয়া চাওয়া হয়।
তার এই মৃত্যুতে দেশের সব রাজনৈতিক দলসহ দেশের সব স্তরের মানুষ শোক প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনিসহ নানা জটিল শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে গত ২৩ নভেম্বর তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসার তত্ত্বাবধান করছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ থাকলেও শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
সাননিউজ/আরআরপি