আজ সোমবার (১২ মে) মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্নার নেতৃত্তে সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে প্রবাসী ভোটিং সিস্টেম উন্নয়নে তাদের প্রস্তাব জমা দেন। অন্যদের মধ্যে ছিলেন- পরিচালনা বোর্ড প্রধান (সাধারণ সম্পাদক) মোঃ শাহজামাল আমিরুল, কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য মোঃ মজিবুল হক, সহ-সভাপতি মোঃ রাসেল কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ তরিকুল ইসলাম, সাহেল আহম্মেদ সোহেল, ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তর) উত্তম কুমার ঘোষ।
প্রস্তাবগুলো হলো-
১) প্রবাসী ভোটারদের অনলাইনের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে।
২) সেক্ষেত্রে প্রথমে প্রবাসী ভোটার তালিকা করা; যেখানে তাঁরা কোন দেশে এবং কোন শহরে আছে তা নির্দিষ্ট করে তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।
৩) সেমিনারে আমাদের যে ধারণাপত্র সরবরাহ করা হয়েছিল ভোটার নিবন্ধন পদ্ধতি হিসেবে তার ৬ এর (চ) এবং (ছ) এর ক্ষেত্রে আমাদের আপত্তি আছে। (চ) এর ক্ষেত্রে আমরা শুধুমাত্র অনলাইন ভোট পদ্ধতির পক্ষে এবং (ছ) এর ক্ষেত্রে যেহেতু আমরা অনলাইন ভোটের পক্ষে তাই আমরা অনলাইন প্রসঙ্গেই কথা বলব, সেক্ষেত্রে ওটিপি এককালীন না একটা নির্দিষ্ট সময় বেধে দিতে হবে এবং সেই সময়ের মধ্যে তা পূরণ করতে হবে।
৪) অনলাইন ভোটিং পদ্ধতির ক্ষেত্রে ধারণপত্রের ৪ নং পেজে যে প্রক্রিয়া উল্লেখ করা হয়েছে তার সাথে আমরা একমত তবে একই ডিভাইস বা একই আইপি এড্রেস থেকে একজন বা একাধিক ব্যক্তি ভোট প্রদান করবে তাঁর উল্লেখ নেই। এক্ষেত্রে আমাদের প্রস্তাব হল একই ডিভাইস বা এক আইপি এড্রেস থেকে একটা ভোটই প্রদান করতে পারবে।
৫) প্রবাসীদের অনলাইন ভোটের রেকর্ড থাকতে হবে যা প্রিন্ট করা যাবে; প্রিন্ট না থাকা নিয়ে বড় সমালোচনা ছিল ইভিএম পদ্ধতির।
৬) অনলাইন ভোট পদ্ধতির ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যেন সাইবার হামলার শিকার না হয়। সে জন্য আইটি সেক্টরকে সাইবার হামলা থেকে রক্ষা করার সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে।
৭) নির্বাচন কমিশনের জনবল সংকটের কারণে প্রবাসীদের ভোট ব্যালটে ভাবাই অবান্তর যদি তা অনলাইনে হয় সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ বিভাগের সক্ষমতা বাড়ালে দেশে বসেই প্রবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে মাত্র কয়েকজনের একটি টিম আর কিছু ডিভাইস।
৮) এক্ষেত্রে যেটা বড় সংকট তৈরী হতে পারে তা হল প্রবাসীদের কাছে স্মার্ট ফোন এবং অ্যাপস ডাউনলোড প্রসঙ্গে ধারণা যা সচেতনতার প্রশ্নে আমরা আমাদের দূতাবাসগুলোকে কাজে লাগাতে পারি।
৯) অন্যদিকে প্রবাসীদের ক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালট ভোট পদ্ধতি সমর্থন করেনা মুক্তিজোট। কারণ বিগত ৫৪ বছরের ভোট পদ্ধতিতে প্রবাসীদের ক্ষেত্রে পোস্টাল ব্যালট প্রমানিত ব্যর্থ।
১০) “আমার ভোট আমি দিব যাকে খুশি তাকে দিব” ভোটের এই রাষ্ট্রীয় স্লোগানই শুধু নয় প্রতিটি ভোটারের ভোট দেওয়ার যে সাংবিধানিক অধিকার তার সাথে সাংঘর্ষিক হওয়াই প্রক্সি ভোট পদ্ধতিও সমর্থন করেনা মুক্তিজোট।
উল্লেখ্য “বিশ্ব এখন গাঁয়ের চেয়ে ছোট” অর্থাৎ গ্লোবাল ভিলেজ তথা বৈশ্বিক নাগরিক বা বিশ্ব সমাজ যা প্রযুক্তিগত উত্তরণের ফসল। সেই প্রযুক্তিকে ভিত্তি ধরেই মুক্তিজোটের ঘোষণা “জনগণ কেবল সরকার গঠন করবে না, সরকার চালনাও করবে- সরকার প্রসঙ্গে ভোট শুধু একবার নয় বরং সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে বারবার।” প্রযুক্তিগত উত্তরণ সাযুজ্যতায় যা সরলীকরণে বলা যায় দুরে থেকেও যেভাবে মোবাইল ফোনের মধ্যদিয়ে আমরা সংসার চালাচ্ছি, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করছি; সেভাবেই জনগণ সরকারের জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির মধ্য দিয়ে শুধু ভোট নয় সকল সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে মতামত দিয়ে সরকার চালাবে; এ ধরনের কিছু কথাও তাদের প্রস্তাবনায় উল্লেখ করেন।
সাননিউজ/ইউকে