মতামত
করোনায় স্থবির শিক্ষাব্যবস্থা

ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থী

প্রসেনজিৎ কুমার রোহিত

করোনার জন্য দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়ছে। দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার জন্য বসে না থেকে মা-বাবার সঙ্গে বিভিন্ন কাজে যোগ দেয়া শুরু করে দিয়েছে। মা-বাবার ধারণা, এভাবে বসে না থেকে কাজ করাই ভালো।

বিভিন্ন ইটভাটায়, কলকারখানায় শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এমনকি তারা শিশুশ্রমের স্বীকার হচ্ছে। কিন্তু এই সময় কোমলমতি শিশুদের দ্বারা এ রকম কাজে পাঠানো মোটেও জাতির জন্য সুখদায়ক নয়। যেখানে কোমলমতি শিশুদের পড়াশোনায় লিপ্ত হওয়ার কথা ছিল, করোনার জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ছেলেমেয়েরা আজ পড়াশোনার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

আবার অনেক শিক্ষার্থী স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় পড়াশোনার প্রতি তাদের এক ধরনের উদাসীনতা ও বিষণ্নতা চলে এসেছে। পড়াশোনা বাদ দিয়ে তারা বিভিন্ন ধরনের নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। ধীরে ধীরে তারা মাদকের ভয়াল ধাবার সম্মুখীন হচ্ছে, যা সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা বিভিন্ন অনলাইন গেমসের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে।

অনলাইন গেমস খেলার জন্য ফোন বা মেগাবাইট কেনার জন্য পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং টাকা না পেলে তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আর এই ঘটনাগুলো ঘটছে অহরহ।

মহামারির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পারিবারিক আয় কমে যাওয়ায় মূলত লেখাপড়ায় ছেদ পড়তে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, আয় কমে যাওয়ায় খরচের জোগান দিতে না পেরে অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে রাখার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

পাশাপাশি অভাবের তাড়নায় অনেক মা-বাবা পরিণত বয়সের আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দিচ্ছেন মেয়েকে। আবার ছেলে সন্তানের হাত থেকে বই-খাতা নামিয়ে দায়িত্ব তুলে দিচ্ছেন সংসারের।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভিভাবকদের মধ্যে একদিকে যেমন সচেতনতার অভাব, অন্যদিকে আর্থিক অসঙ্গতি। করোনাকালের এই দুর্যোগে পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য তারা সন্তানদের কাজে পাঠিয়ে বাড়তি আয়ের চেষ্টা করবেন এটাই স্বাভাবিক।

তাদের মতে, যুব সমাজের একটি অংশ শিক্ষা, প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন তৎপরতায় সক্রিয় আছে। অপর একটি অংশ রয়েছে বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। কেউ মাদকে যুক্ত, কেউ অবসাদে ভুগছে। আর এই বাস্তবতাই বলে দিচ্ছে, শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার শঙ্কাই বেশি। এর থেকে বেরিয়ে আসতে হলে, অখণ্ড চিন্তা থেকে সরে এসে বিভাজিতভাবেই যুবাদের দেখতে হবে এবং কীভাবে তাদের সক্রিয় করা যায় তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

শিক্ষাব্যবস্থা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেয়া এখন সময়ের দাবি। কারণ এভাবে চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে ধাবিত হবে। তাই শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে রোধ করতে সোচ্চার হতে হবে আমাদের। বিষয়টি অতীব জরুরি।

প্রসেনজিৎ কুমার রোহিত: শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ।

[email protected]

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জামায়াত, এনসিপির শর্তের চাপে বিএনপি, নির্বাচন নিয়ে নতুন শঙ্কা

বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে আন্দোলনে নামার...

পাথর তোলায় রাজনৈতিক দলের ‘ঐকমত্য’, পরে লুট

বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ থাকলেও পাথর উত্তোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর স্থান...

যমুনা সেতুর পশ্চিমে মহাসড়ক অবরোধ, বিচ্ছিন্ন ঢাকা-উত্তরবঙ্গ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রক...

যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে, রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে: সালাহউদ্দিন

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প...

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ৫ উপজেলার বহু মানুষ পানিবন্দি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে...

দেব–শুভশ্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়

দীর্ঘ বিরতির পর সাবেক প্রেমিক জুটি দেব ও শুভশ্রী পর্দায়। কৌশিক গাঙ্গুলীর &lsq...

নির্বাচনের রোডম্যাপ আগামী সপ্তাহে, আশা ইসির

আগামী সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণা করতে পারব...

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কাল

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা করতে আগামীকাল শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ব...

দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী

মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী। পাকিস্তানের বাণ...

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ৫ উপজেলার বহু মানুষ পানিবন্দি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা