কবি ফররুখ আহমদের সাহিত্য শোষণের বিরুদ্ধে
ঐতিহ্য ও কৃষ্টি

কবি ফররুখ আহমদের সাহিত্য শোষণের বিরুদ্ধে

সান নিউজ ডেস্ক : কবি ফররুখ আহমদের কবিতা ও গানে দেশের মানুষের হৃদয়ে লালিত আদর্শের ধ্বনি প্রতিধ্বনিত্ব হয়েছে জানিয়ে কবি আল মুজাহিদী বলেন, তাঁর সাহিত্য শোষিতের কান্না,শোষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ মানবতার মুক্তির প্রেরণা এবং হেরার আলোয় উদ্ভাসিত কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দর্শন। তাই আমাদের দায়িত্ব নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা।

আরও পড়ুন : আমাদের ঐতিহ্য “ বানিয়ারা”

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) কবি আল মুজাহিদী মানবতার কবি ফররুখ আহমদ স্মরণে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেছেন।

বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমির চেয়ারম্যান বাচিকশিল্পী শরীফ বায়জীদ মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কবি ও গীতিকার ড. আ জ ম ওবায়দুল্লাহ ও কবি আবু তাহের বেলাল।

অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি নাসির হেলাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমির সেক্রেটারি গল্পকার ইবরাহীম বাহারী।

আরও পড়ুন : ম্যানগ্রোভ অঞ্চল : খন্দকার আশরাফুল ইসলাম

নিবেদিত কবিতা পাঠ করেন কবি শহীদ সিরাজী ও আমিনুল ইসলাম। কবি ফররুখ আহমদের কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী মাহবুব মুকুল ও মোস্তাগিছুর রহমান। একক সংগীত পরিবেশ করেন হাসনাত আবদুল কাদের, লিটন হাফিজ চৌধুরী ও আমিরুল মোমেনীন মানিক।

কোরাস পরিবশেনায় দর্শকদের মুগ্ধ করেছে বিসিএ শিল্পীগোষ্ঠী ও ড্রিম হোমসের শিশু শিল্পীরা। শিশুশিল্পী জাহিন ইকবাল ও মাহজুবা মুহান্নী ইজাফা- এর পরিবেশনাও ছিলো আকষর্ণীয়।

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন বাচিকশিল্পী ও নাট্যকার আহসান হাবীব খান।

আরও পড়ুন : সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা পেলেন এ্যাডভোকেট শাহিদা

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমির চেয়ারম্যান বাচিকশিল্পী শরীফ বায়জীদ মাহমুদ কবি ফররুখ আহমদকে নিয়ে তাদের বর্তমান সৃজনশীল কাজ ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন বলেন, দেশ ও জাতির প্রয়োজনেই কবি ফররুখ আহমদের গান, কবিতা ও সাহিত্যকে জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে।

কালচারাল একাডেমি এজন্য যে কাজ করছে তা যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে সবার আন্তরিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে হবে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, 'মুসলিম রেনেসাঁর কবি' হিসেবে পরিচিতি বাঙালি কবি সৈয়দ ফররুখ আহমদের কবিতায় বাংলার অধঃপতিত মুসলিম সমাজের পুনর্জাগরণের অনুপ্রেরণা প্রকাশ পেয়েছে।

বিংশ শতাব্দীর এই কবি ইসলামি ভাবধারার বাহক হলেও তার কবিতা প্রকরণকৌশল, শব্দচয়ন এবং বাক্‌প্রতিমার অনন্য বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। আধুনিকতার সকল লক্ষণ তার কবিতায় পরিব্যাপ্ত।

আরও পড়ুন : সাহিত্যিক-সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমেদের জন্মবার্ষিকী পালিত

বাঙালি কবির কবিতায় রোমান্টিকতা থেকে আধুনিকতায় উত্তরণের ধারাবাহিকতা পরিস্ফুট। "সাত সাগরের মাঝি" কাব্যগ্রন্থে তিনি যে-কাব্যভাষার সৃষ্টি করেছেন তা স্বতন্ত্র এবং এ-গ্রন্থ তার এক অমর সৃষ্টি।

১৯১৮ সালে সৈয়দ ফররুখ আহমদ (তৎকালীন যশোর জেলার অন্তর্গত) মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার মাঝাইল গ্রামের সৈয়দ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ হাতেম আলী ছিলেন একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর। তার মায়ের নাম রওশন আখতার।

১৯৪২ সালের নভেম্বর মাসে আপন খালাতো বোন সৈয়দা তৈয়বা খাতুনের (লিলি) সঙ্গে ফররুখ আহমদের বিয়ে হয়। তার নিজের বিয়ে উপলক্ষে ফররুখ 'উপহার' নামে একটি কবিতা লেখেন যা সওগাত পত্রিকায় অগ্রহায়ণ ১৩৪৯ সংখ্যায় ছাপা হয়।

আরও পড়ুন : মনে রেখো তবু : খন্দকার আশরাফুল ইসলাম

কবি ফররুখ আহমদের ছেলে-মেয়ে ১১ জন। তারা হলেন: সৈয়দা শামারুখ বানু, সৈয়দা লালারুখ বানু, সৈয়দ আবদুল্লাহল মাহমুদ, সৈয়দ আবদুল্লাহেল মাসুদ, সৈয়দ মনজুরে এলাহি, সৈয়দা ইয়াসমিন বানু, সৈয়দ মুহম্মদ আখতারুজ্জামান (আহমদ আখতার), সৈয়দ মুহম্মদ ওয়হিদুজ্জামান, সৈয়দ মুখলিসুর রহমান, সৈয়দ খলিলুর রহমান ও সৈয়দ মুহম্মদ আবদুহু।

খুলনার জিলা স্কুল থেকে ১৯৩৭ সালে ম্যাট্রিক এবং কলকাতার রিপন কলেজ থেকে ১৯৩৯ সালে আই.এ. পাস করেন ফররুখ আহমদ। এরপর স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শন এবং ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন।

ছাত্রাবস্থায় তিনি বামপন্থী রাজনীতিতে ঝুঁকে পড়েন। তবে চল্লিশ-এর দশকে তার রাজনৈতিক বিশ্বাসে পরিবর্তন আসে। তিনি ভারত বিভাগ তথা পাকিস্তান আন্দোলন সমর্থন করেন।

আরও পড়ুন : হুমায়ূন আহমেদের চলে যাওয়ার দশ বছর

এই বাঙালি কবির কর্মজীবন শুরু হয় কলকাতায়। তিনি ১৯৪৩ সালে আই.জি.প্রিজন অফিসে, ১৯৪৪ সালে সিভিল সাপ্লাইতে এবং ১৯৪৬ সালে জলপাইগুড়িতে একটি ফার্মে চাকরি করেন।

১৯৪৫ সালে তিনি মাসিক মোহাম্মদীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তবে শেষ পর্যন্ত স্থায়ীভাবে চাকরি করেন ঢাকা বেতারে। দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে ফররুখ আহমদ কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে এসে ঢাকা বেতারে যোগ দেন।

আরও পড়ুন : ‘জাতীয় কবি’র গেজেট চেয়ে আইনি নোটিশ

এখানেই প্রথমে অনিয়মিত হিসেবে এবং পরে নিয়মিত স্টাফ আর্টিস্ট হিসেবে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।

১৯৭৪ সালের ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যেবেলায় ঢাকায় মুসলিম রেনেসাঁর বাঙালি কবি ফররুখ আহমদ মৃত্যুবরণ করেন।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

খাগড়াছড়িতে গৃহকর্মীকে জিম্মির অভিযোগ 

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ

আড়িয়ল ইউপিতে উপ-নির্বাচন

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি দিবস

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

কার্বণ মিল ও সীসা কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী প্রতিনিধি:

কার্বণ মিল ও সীসা কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী প্রতিনিধি:

কক্সবাজারে দুই জেলের লাশ উদ্ধার 

জেলা প্রতিনিধি: কক্সবাজার জেলার চ...

আড়িয়ল ইউপিতে উপ-নির্বাচন

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

খাগড়াছড়িতে গৃহকর্মীকে জিম্মির অভিযোগ 

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা