আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা ভাইরাস আতঙ্ক, মহামারীর রূপ নিয়েছে চীনে। জ্যামিতিক হারে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় মাত্র দুই দিনে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল প্রস্তুত করল চীন সরকার।
হাসপাতালটি মঙ্গলবার উদ্বোধন করা হয়েছে। মধ্য চীনে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়। খবর যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারের।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি স্টারে বলা হয়, ২ দিনের মধ্যে প্রস্তুতকৃত হাসপাতালটি করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান শহর থেকে ৪৬ মাইল দূরে অবস্থিত। গত ২৬ জানুয়ারি হাসপাতালটির কাজ শুরু করে চীন।
হুয়াংঝু জেলায় নির্মিত ওই হাসপাতাল ভবনটি মূলত হুয়ানগ্যাং সেন্ট্রাল হাসপাতালের একটি নতুন শাখা। এটি আগামী মে মাসে চালু করার কথা ছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ওই হাসপাতালকে এখন করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহারের চিন্তা করে।
হাসপাতালে মঙ্গলবার চীনের স্থানীয় সময় ১০টা৩০ মিনিটে প্রথম রোগী ভর্তি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানান, সোমবারই হাসপাতালটিতে পানি, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট এবং বিছানার ব্যবস্থা করা হয়।
জানা গেছে, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রায় ৫ শ শ্রমিক দুই দিনে একটানা কাজ করে এই হাসপাতালের যাবতীয় নির্মান কাজ শেষ করেন।
এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ৪৮ ঘণ্টার দীর্ঘ পরিশ্রমে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। নির্মাণ সংস্থা, ইউটিলিটি কোম্পানি এবং আধাসামরিক পুলিশ কর্মকর্তারা যৌথভাবে এই কাজে সহায়তা করে।
জানা গেছে, ওই ভবনের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেলেও তা খালিই পড়ে ছিল। গত শুক্রবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সেখানে শুধুমাত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছে।
সোমবার স্বেচ্ছাসেবিরা সেখানে এক হাজার শয্যা স্থাপন করেন। এ ছাড়া পানি, বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। কয়েক ডজন ভারী যানবাহন দিয়ে গত দুই দিন টানা কাজ করে হাসপাতালের কাজ শেষ করা হয়।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এ জাতীয় আরও তিনটি হাসপাতাল নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে চীনের উহানে দুটি এবং ঝেংঝুতে একটি হাসপাতাল নির্মিত হবে।
গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে।এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৩২ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৬ হাজার মানুষ।
চীন ছাড়াও থাইল্যান্ড, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়াসহ ১৫টি দেশে ৪৭ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তবে চীনের বাইরে করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মত সমস্যা দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে।
সান নিউজ/সালি