আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী রুশভাষী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণাধীন পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ দনেতস্কের একটি কারাগারে রকেট হামলা করেছে । তবে এই হামলায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের নিজেদেরই । অর্থাৎ ৪০ জন ইউক্রেনীয় সেনা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭৫ জন।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ১২
শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবিবৃতে বলা হয়, এ দিন ভোরবেলায় দনেতস্কের কালমিউস্কে জেলার ওলেনিভকা শহরের একটি কারাগারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী।
এ হামলায় ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী দূরপাল্লার এইচআইএমএআরএস রকেট ব্যবহার করেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সহায়াতা হিসেবে এসব রকেট এসেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দফতর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে অবশ্য ইউক্রেনকে বলা হয়েছিল, যুদ্ধক্ষেত্রে এই বিশেষ দূরপাল্লার রকেট সিস্টেম পরিচালনা করতে হলে তিন মাস মেয়াদী বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন : আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করল চীন
শুক্রবার কারাগারটিতে রকেট হামলা হয়েছে, সেটি বিশেষ কারাগার ছিল। কারণ সেখানে যত বন্দি ছিল, তারা সবাই যুদ্ধবন্দি এবং ইউক্রেন সেনাবাহিনীর সদস্য। নিয়িমিত সেনা সদস্যদের পাশাপাশি গত মে মাসের মাঝামাঝি ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর শহর মারিউপোলে রুশ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করা ইউক্রেন সেনাবাহিনীর বিশেষ শাখা আজভ ব্যাটালিয়নের বেশ কয়েকজন সেনাকেও রাখা হয়েছিল এই কারাগারটিতে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলা হয়,‘দনেতস্কের সামরিক আদালতে এই যুদ্ধবন্দিদের সবার বিচার শুরু করার প্রস্তুতি চলছিল। তার আগে অস্থায়ীভাবে তাদেরকে এখানে রাখা হয়েছিল।’
বার্তাসংস্থা রয়টার্স রুশ সরকারের এই বিবৃতির সত্যতা যাচাই করতে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু দেশটির কোনো কর্মকর্তা এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
আরও পড়ুন : ভারতীয় নতুন হাইকমিশনার প্রণয় কুমার
রাশিয়ার বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্সকে দনেতস্কের রুশ বিচ্ছন্নতাবাদীদের নেতা ডেনিস পুশিলিন জানান, কারাগারটিতে মোট ১৯৩ জন যুদ্ধবন্দি ছিল এবং তারা প্রত্যেকেই ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সদস্য।
প্রসঙ্গত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এই ঘোষণার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
আরও পড়ুন : ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান শুক্রবার ১৫৫তম দিনে গড়িয়েছে। এই চার মাস সময়ের মধ্যে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্ক, ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, রুশ বাহিনীর হাতে মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে।
সান নিউজ/এইচএন