আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা কৃষকরা দিল্লির প্রবেশদ্বার অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রস্তাব দেন, ৩ ডিসেম্বর সরকারের সঙ্গে কৃষকদের আলোচনার সময় নির্ধারিত রয়েছে। কৃষকরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হলেই আলোচনা হতে পারে।
রবিবার ( ২৯ নভেম্বর) সরকারের এই প্রস্তাব নাকচ করে কৃষক সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, তারা সরকারের মর্জিমাফিক বুরারি ময়দান থেকে সরবে না। তার বদলে দিল্লিতে প্রবেশের পাঁচটি রাস্তাতেই অবরোধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কৃষকরা।
কৃষক নেতাদের দাবি, তাদের কাছে চার মাসের রসদ রয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকারের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে পিছু হটবেন না। এর মধ্যেই বিজেপি তথা মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে হরিয়ানার প্রভাবশালী খাপ পঞ্চায়েতগুলি সব রকম ভাবে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে।
সোমবার (৩০ নভেম্বর) খাপের সদস্যরা দিল্লির অভিমুখে যাত্রা করবে বলে জানিয়েছেন দাদরির বিজেপি সমর্থিত নির্দল বিধায়ক সোমবীর সাঙ্গোয়ান। মোদী সরকারকে কৃষি আইন পুনর্বিবেচনার অনুরোধও জানিয়েছে তারা।
অমিত শাহের প্রস্তাব নিয়ে কৃষক সংগঠনগুলির আলোচনার পরে পঞ্জাবের ভারত কিসান ইউনিয়ন (ক্রান্তিকারী)-এর সভাপতি সুরজিৎ সিংহ ফুল বলেন, ‘‘সরকার যে ভাবে আলোচনার জন্য শর্ত রেখেছে, তাকে আমরা কৃষক সংগঠনের অপমান বলে মনে করি।
আমরা কোনও ভাবেই বুরারি ময়দানে যাব না। ওটা আসলে মুক্ত জেলখানা। প্রধান পাঁচটি সড়ক অবরোধ করে দিল্লি ঘেরাও করব।’ কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাকে কৃষকদের মঞ্চে আসার অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানান।
হরিয়ানা থেকে দিল্লিতে ঢোকার টিকরী ও সিংঘু সীমানায় কৃষকরা অবরোধ শুরু করেছেন। ফলে এক নম্বর জাতীয় সড়ক কার্যত বন্ধ। উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে ঢোকার গাজিপুর সীমানাতেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। এর পরে চাষিরা আরও দুই সড়ক বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিলেও মোদী সরকার এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড়।
উল্টে রবিবার রেডিয়োর মন কি বাত অনুষ্ঠানে মোদীর দাবি, ‘‘দীর্ঘ আলাপ আলোচনার পরে সম্প্রতি সংসদে পাশ হওয়া কৃষি সংশোধনী আইনের ফলে কৃষকরা শুধু শিকলমুক্ত হননি, নতুন অধিকার ও নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা এসে পৌঁছেছে তাঁদের হাতে।’
রবিবার সকালে মোদীর এমন বার্তার পরেই কৃষক নেতারা বুঝে যান, মোদী সরকার কোনও ভাবেই আইন প্রত্যাহার করবে না। কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমরও জানিয়ে দেন, চাষিদের স্বার্থেই কৃষি আইন আনা হয়েছে। তার বক্তব্য, ‘কৃষকদের সঙ্গে আমাদের তিন বার আমলা, মন্ত্রী স্তরে আলোচনা হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর ফের বৈঠক হবে, আগেই ঠিক ছিল। সরকার খোলা মনে কথা বলতে তৈরি। কিন্তু আলোচনার আবহ দরকার।’
সান নিউজ/এসএ