ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) এবং আসামের এনআরসি নিয়ে কয়েক মাস ধরেই উত্তাল ভারত। বিষয় দুটি নিয়ে সমালোচনা চলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বিশ্লেষকদের অভিমত, সাম্প্রদায়িকতার ওপর ভর দিয়ে চলা দেশটির সরকার ভারতকে বিভাজনের চেষ্টা করছে। বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে জাতিসংঘকেও।
নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের কারণে ভারতে প্রায় ২০ লাখ মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এমনটা মনে করে বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ।
সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্ট সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের ফলে যারা রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন তার মধ্যে বেশির ভাগই মুসলিম। ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান বৈষম্যে জাতিসংঘের মহাসচিব ব্যক্তিগতভাবে উদ্বিগ্ন কিনা, পাকিস্তানের ডন নিউজের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে । জবাবে অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ বলেন, ‘অবশ্যই’। এটা প্রাসঙ্গিক যে, পৃথিবীর যেখানেই নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন বা সংশোধন হোক, সেখানে এমন উদ্যোগ থাকতে হয় যাতে মানুষের রাষ্ট্রহীন হওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যায় এবং পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ কোনো একটি দেশের নাগরিক এটা নিশ্চিত করা হয়।
কাশ্মীরে নির্যাতন, যৌন নির্যাতন, শিশুদের অবরোধ করে রাখা নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও সম্প্রতি নয়া দিল্লির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্ট সহ আন্তর্জাতিক মিডিয়ার রিপোর্ট প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয় জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে। তিনি বলেন, কাশ্মীরে প্রকৃতপক্ষে কি ঘটছে তা পরিষ্কার হওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ হাই কমিশনারের দুটি রিপোর্ট সহ এসব রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এসব রিপোর্ট সিরিয়াসলি নেয়া অত্যাবশ্যক।
ভারত দখলীকৃত কাশ্মীর উপত্যাকায় একটি উচ্চ শক্তিসম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠন ও নৃশংসতা তদন্ত করতে কেন জাতিসংঘ ব্যর্থ হলো? এ প্রশ্নের জবাবে অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ বলেন, জাতিসংঘের শুধু গভর্নিং বডি বা নিরাপত্তা পরিষদ ওই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে ওইসব রিপোর্ট বিশ্বাসযোগ্য, প্রাসঙ্গিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় তিনি স্বীকার করে নেন যে, জাতিসংঘের বর্তমান কাঠামো এবং স্থায়ী পাঁচ সদস্যরাষ্ট্রের ভেটো দেয়ার ক্ষমতা জাতিসংঘের উদ্দেশ্য প্রয়োগের সক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই জাতিসংঘ তো সংঘাত সমাধানের জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছিল।
জাতিসংঘের সক্ষমতা বৃদ্ধিকে নিশ্চিত করতে হলে তিনি মনে করেন, এতে সংস্কার করতে হবে অধিক গণতান্ত্রিক, অধিক উন্মুক্ত ও অধিক কার্যকর হিসেবে। নিশ্চিত করতে হবে আমরা বর্তমানে যে বহুজাতিক বিশ্বে বাস করছি তার যেন অধিক পরিমাণ প্রতিনিধি এতে থাকেন।