নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে পরীক্ষা করতে আসা রোগীদের রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে দিনে দিনে ভিড় বাড়ছে। করোনায় আক্রান্ত এমন ১০০-এরও বেশি রোগী প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, হাসপাতালে করোনা রোগীর আগমন মাসের শুরুতে যা ছিল ৬০ থেকে ৭০ জনের মতো। এখন সেই সংখ্যা শতো ছাড়িয়ে যাচ্ছে। জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত এক কর্মী বলেন, হঠাৎ করে করোনা রোগীর চাপ বাড়ছে। মাঝে রোগী কম ছিল। গত দুই সপ্তাহ ধরে রোগী বেশি আসছে।
এখন দৈনিক ১০০-এর মতো রোগী আসছে। যাদের অবস্থা খারাপ তাদের ভর্তি করা হচ্ছে। আর যাদের অবস্থা একটু ভালো তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও ওষুধ দিয়ে বাসায় থাকতে বলা হচ্ছে।
রোগী নিয়ে আসা ফারভিন নামে একজন বলেন, আমি আমার মামাকে নিয়ে এসেছি। হঠাৎ অসুস্থ হওয়ায় তাকে করোনা টেস্ট করিয়েছি, পজিটিভ এসেছে। এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি, অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে।
ফারভিন আরও জানান, তার মামার বয়স ৬০-এর বেশি। স্বাভাবিকভাবেই চলাফেরা করছিলেন তিনি। জ্বর আসার একদিন পরই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। কোভিড টেস্ট করে জানলাম তিনি করোনা আক্রান্ত। আজব একটা রোগ, কে যে আক্রান্ত, কে না, কিছুই বোঝা যায় না।
এই হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, বেশ কিছুদিন নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তা বাড়তে শুরু করেছে। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে সামনে অবস্থা খারাপ হতে পারে।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. অসীম কুমার নাথ সাংবাদিকদের বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। তবে আগের সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে খুব বেশি বাড়েনি। এখন প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ জন করে করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছেন। আমাদের সাধারণ ৩০০ বেডের মধ্যে আজ বেডে রোগী আছে ১২৯ জন। গতকাল ছিল ১২১ জন, তার আগের দিন ছিল ১১৫ জন। এছাড়া ২৪টি আইসিইউ (ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট) বেডে ২৩ জন রোগী ভর্তি আছেন।
তিনি জানান, চলতি মাসের শুরুতে প্রতিদিন গড়ে ৭০ জনের মতো করোনা রোগী চিকিৎসা নিতেন, এখন তা ১০০ ছাড়িয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে গড়ে ১০০-এর বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ভর্তির হার জুন মাসের শুরুতে ছিল ৫ থেকে ৬ জন; এখন বেড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়ে ডা. অসীম কুমার জানান, সার্বিকভাবে বলতে গেলে পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ। এখানে এক জেলা থেকে অন্য জেলার যোগাযোগ খুব বেশি। মানুষ অনেক মুভমেন্ট করে। তার মানে যতই কড়াকড়ি করা হোক, রোগটা ছড়াবেই।
যেভাবে রোগী বাড়ছে তা অব্যাহত থাকলে এ মাসের শেষে বা জুলাইয়ের শুরুর দিকে আমাদের জন্য খারাপ সময় আসতে পারে বলেও আশঙ্কা তার। আর এ জন্য সতর্ক হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না এই চিকিৎসক।
সান নিউজ/এমএম