ফিচার
হারিয়ে গেল মসলিন 

ব্রিটিশদের আয় ছিলো ৭৫ ভাগ  

আহমেদ রাজু

বাংলার সবচেয়ে মূল্যবান শিল্প ছিলো ঢাকাই মসলিন। কোম্পানি সরকারের অসহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে এটি হারিয়ে যায়। অথচ এই মসলিন ছিলো জগদ্বিখ্যাত। প্রাচীনকালের রাজা-বাদশা ও অভিজাত শ্রেণির খুব পছন্দের ছিলো মসলিন।

মসলিন দেশে ছাড়াও বিভিন্ন দেশের সৌখিন ফ্যাশনপ্রিয় মানুষের মন জয় করেছিলো।

১৭৮৯ সালের ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির এক রিপোর্ট থেকে জানা যায়—বাংলার তাঁতীরা কোনো ‘মেশিন’ ছাড়াই নিজেদের উদ্ভাবিত অতি সাধারণ কিছু যন্ত্রপাতি দিয়ে সুন্দর ও অতিসূক্ষ্ম বস্ত্র তৈরি করেন। কোম্পানির ৭৫ শতাংশ আয় হতো মসলিন রপ্তানির মাধ্যমে।

জেমস টেলর ১৭৯৮ সালে ‘এ স্কেচ অব দ্য টপোগ্রাফী অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকস অব ঢাকা’ নামে একটি বই প্রকাশ করেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ১৭৪৭ সালে ঢাকা জেলার আড়ৎ থেকে বছরে প্রায় ২৮ লাখ টাকার মসলিন বিদেশে রফতানি হতো। এরমধ্যে শুধু সোনারগাঁও আড়ৎ থেকেই আসতো প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার মসলিন।

টেলর লিখেছেন, ১৭৫৭ সালের পলাশিযুদ্ধের পর ইংরেজরা যখন বাংলার কর্তা হয়ে ওঠে, তখন তারা বছরে ব্রিটেনে আট লাখ টাকার মসলিন রফতানি করতো। সেই সময়ে ফরাসিরা কিনে ছিলো প্রায় তিন লাখ টাকার মসলিন।

ইরানি, তুরানি, আর্মেনীয়দের পাশাপাশি দেশিয় ব্যবসায়ীরাও মসলিনের ব্যবসা করতেন। সব মিলিয়ে সে আমলে ঢাকা ও সমগ্র বাংলা থেকে রফতানির জন্য কেনা হয়েছিলো প্রায় ঊনত্রিশ কোটি টাকার মসলিন, টেলর লিখেছেন।

মসলিন এত সুক্ষ ও মিহি ছিলো যে ৫০ মিটার কাপড় একটি দেশলাই এ ভরে রাখা যেত। উঁচু পর্যায়ের লোক ব্যবহার করায় এর দামও ছিলো আকাশ ছোঁয়া।

সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় ১৬১০ সালে ২ হাত প্রস্থের ৩০ হাত মসলিনের দাম ছিলো ব্রিটিশ মুদ্রায় ৩০০ পাউন্ড। মুঘল আমলে মসলিন বস্ত্রে সোনালি ও রুপালি সুতায় তৈরি জমিনে মনি-মুক্তা আর মূল্যবান পাথর বসিয়ে নকশা করা হতো

১৭৪৭ সালের অপর এক হিসেব থেকে পাওয়া যায় দিল্লির মুঘল বাদশাহ, বাংলার নবাব ও জগত শেঠের জন্য ওই বছর প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার মুসলিন পাঠানো হয়েছিলে

স্যার চার্লস ডয়লি ১৮০৮ সালে কালেক্টর হয়ে ঢাকায় আসেন। ১৮২৭ সালে তিনি সোনারগাঁও মসলিন পল্লীতে যান। এবং তাঁতীদের জীবনকর্ম নিয়ে ছবি আঁকেন। অবশ্য তখন মসলিনের বাজার পড়তির দিকে।

ডয়লি লিখেছেন, তাঁতীরা তখন পেশা ত্যাগ করতে শুরু করেছেন। সোনারগাঁও এলাকায় ওইসময় মসলিন তাঁতী ছিলো ৭০০ থেকে ৮০০। কিন্তু তারাও আর মসলিন বোনার কাজ করতে চান না।


ছবি—চার্লস ডয়লি, ১৮২৭,

সোর্স—ব্রিটিশ লাইব্রেরি

সান নিউজ/ আরএস-১

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভূমি অফিসে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, নীরব প্রশাসন; ফুঁসছে জনগন!

মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠ পঞ্চসার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের জারিকারক লুৎফা আক্তার (৪৫)...

প্রাকৃতিক উদ্ভিদে নিরাপদ খাদ্যের উৎস !

পার্বত্য চট্টগ্রামের উঁচু–নিচু পাহাড়ে বা সাধারণত জমির আশেপাশে সবজি ক্ষে...

ছাত্রলীগ সভাপতির বসতঘরে আগুন

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার গালুয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মাছুম বিল্লাহ বাপ্পির...

রামগড়ে অবৈধ ইন্টারনেট সরঞ্জামসহ তিনজন আটক

খাগড়াছড়ির রামগড়ে খান কমপ্লেক্সের চতুর্থ তলার একটি কক্ষ থেকে অবৈধ ইন্টারনেট...

আজ সেই ভয়াল ১৫ নভেম্বর, ১৮ বছরেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি উপকূলবাসী

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর—দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনে এক বিভীষিকাময় রাত। ভয়...

মধুখালীতে ৬৫ পিস ইয়াবাসহ আটক যুবক

ফরিদপুরের মধুখালীর কুখ্যাত ডাকাত ও একাধিক মামলার পলাতক আসামি মোঃ রানা (২৬) কে...

হাতের অপারেশন করাতে গিয়ে প্রাণ গেল নারীর

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর প্রাইম হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় রাবেয়া বেগম (৪৮) নামে...

মাদারীপুরে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য আটক

মাদারীপুর সরকারি কলেজের নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সো...

প্রাকৃতিক উদ্ভিদে নিরাপদ খাদ্যের উৎস !

পার্বত্য চট্টগ্রামের উঁচু–নিচু পাহাড়ে বা সাধারণত জমির আশেপাশে সবজি ক্ষে...

লকডাউনের আজাহার দিনে বিএনপি, রাতে আ. লীগ

মাদারীপুরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে আওয়ামী লীগের ডাকা ১৩ নভেম্বরের লকডাউন স...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা