বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নবীন এক ছাত্রীকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাতভর নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : শান্তিরক্ষা মিশনে গেলেন ১৪০ পুলিশ সদস্য
শনিবার (৪ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং শেষে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না এ বিষয়ে জবাব চাওয়া হয়েছে। বহিষ্কৃতরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন : ফতুর হতে চলেছে রাশিয়া!
সাময়িক বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, একই শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম এবং চারুকলা বিভাগের হালিমা আক্তার ঊর্মি।
এর মধ্যে সানজিদা চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। অন্যরা ছাত্রলীগের কর্মী। নির্যাতনের ঘটনায় পাঁচজনকেই সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এদিকে, অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন : একমাত্র লক্ষ্য জনগণের সেবা করা
ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবারও অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানান। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও এ দাবি জানানো হয়।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিক এক ছাত্রী বলেন, ওই মেয়ের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা শুনে গা শিউরে ওঠে। সভ্য সমাজে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এমন ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কার করলে অন্যদের জন্য বিষয়টি শিক্ষণীয় হয়ে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় তাদের জন্য যে পরিমাণ বিব্রত হয়েছে এই ক্যাম্পাসে বিচরণের কোন অধিকার তাদের নেই।’
হাইকোর্ট থেকে সাময়িক বহিষ্কারের নির্দেশের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন বলেন, ‘আমার ওপর তারা যে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে, তাতে অস্থায়ী বহিষ্কার নয় আমি তাদের স্থায়ী বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল চাই। তা না হলে ক্যাম্পাসে ফিরলে আমাকে মেরে ফেলার আশঙ্কা থাকবে।’
অভিযুক্তরা আর ক্যাম্পাসে না আসুক এই দাবি ভুক্তভোগীর পরিবারেরও। ভুক্তভোগীর বাবা আতাউর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে পারবে কি-না এ বিষয়ে আমরা সন্দিহান। এ ধরনের অপরাধীরা ক্যাম্পাসে আর না থাকুক সেটাই চাই আমরা।’
আরও পড়ুন : প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টনি ব্লেয়ারের সাক্ষাৎ
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আচরণ বিধির দ্বিতীয় অধ্যায়ের বিধি-৮ অনুযায়ী, কোন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা বিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ পেলে উপাচার্য সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত সাময়িক বহিষ্কার করতে পারেন।
এছাড়া অপরাধের মাত্রা আরো বেশি হলে উপাচার্য এটি শৃঙ্খলা কমিটিতে প্রেরণ করেন। সেখানে তদন্ত ও পর্যালোচনা করে সুপারিশসহ সিন্ডিকেটে প্রেরণ করা হয়। সিন্ডিকেট পর্যালোচনা করে সুপারিশ অনুযায়ী বা যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
সান নিউজ/জেএইচ