এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): নাম বাদশাহ। যার অর্থ রাজা বা সম্রাট। নামের অর্থ রাজা হলেও বাস্তবে নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের অদম্য মেধাবী ‘বাদশাহ’। এই মেধাবী ছেলেটি গরীব ঘরের সন্তান হয়ে সে গরীরের ডাক্তার হতে চায়। সে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখছেনা,স্বপ্ন দেখছে জেগে। কিন্তু বাদশাহর এই স্বপ্ন পূরণ তার গরীব বাবা মার পক্ষে সম্ভব নয়। সন্তান ভালো ফলাফল করলে বাবা-মার মনে সাধারণত বাঁধভাঙা উল্লাস নামে। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটনাও আছে।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামে তেমনি এক হতভাগ্য গর্বিত পিতার সন্ধান পাওয়া গেছে। তার নাম মোঃ শাহাবুদ্দিন (৪২)। পেশায় একজন গার্মেন্টস কর্মী তিনি। বর্তমান সময়ের দ্রব্য-মূল্যের সময়ে তার স্বল্প আয়ে সংসারের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এক পসলা সুখের বৃষ্টি নামার কথা ছিল ছেলে বাদশাহর এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার খবরে। আঠারবাড়ি এম.সি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে ছেলে। এতে একদিকে মনে মনে খুশী হয়েছেন ঠিকই। কিন্তু এই খবর পাওয়ার পর আনন্দ করার আগেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পিতার কপালে। ছেলের ফলাফল তাকে ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি ফেলতে বাধ্য করছে। একারণেই ছেলের সাফল্যেও বাবার চোখে অন্ধকার নেমে এসেছে।তবে বাবার দৃঢ় ইচ্ছে যেভাবেই হোক ছেলেকে পড়াশোনা করাবেন।
বাদশাহর পিতা শাহাবুদ্দিন বলেন, সবাই আমার ছেলের সুনাম করছে। এতে আমিও গর্বিত ও আনন্দিত। কিন্তু আমি তো এখন চিন্তায় আছি, আগামীতে ছেলেকে কলেজে কীভাবে পড়াবো, এমন ক্ষমতা তো আমার নেই।
তিনি আরও জানান, তার দুই ছেলে। বড় ছেলে বাদশাহ এবার এসএসসি পরীক্ষা দিলো। আর ছোট ছেলে আবু রায়হান একই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।অভাবের সংসারে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ ঠিকমতো জোগাতে পারিনা। অভাবে কারণে তাদের ভালো পোশাক ও স্কুলে যাওয়া-আসার খরচ দিতে কষ্ট হয় ।ছেলে পরীক্ষায় ভালো করেছে। ছেলের স্বপ্ন ডাক্তারী পড়বে।সে জন্য ভালো কলেজে ভর্তি হতে হবে। আগামীতে কীভাবে ছেলেকে পড়াবো তাই ভাবছি।
আঠারবাড়ি এম.সি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল মতিন ভূইয়া জানান, বাদশাহ অত্যন্ত মেধাবী এবং ভদ্র। সে ক্লাসে সব সময় মনোযোগী থাকতো। সে জিপিএ-৫ অর্জন করায় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-কর্মচারী অত্যন্ত খুশি।
সান নিউজ/এনকে