ছবি: সংগৃহীত
সারাদেশ

গরুর বদলে নিজেরাই মই দিচ্ছেন দম্পতি

আশরাফুজ্জামান সরকার, গাইবান্ধা প্রতিনিধি: হতদরিদ্র নেপেন (৪০) ও সুভাসিনি (৩৫) দম্পতি। আয়ের উৎস বলতে অন্যের জমি বর্গাচাষের পাশাপাশি খালে-বিলে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করাই তাদের পেশা।

আরও পড়ুন: সাদুল্লাপুরে নির্বাচনের মাঠে আ’লীগের ৬ নেতা

এতে যে টাকা মেলে তা দিয়েই মেটাতে হয় সংসারের ৭ সদস্যের মৌলিক চাহিদা। তাই খরচ বাঁচাতে গরুর হালের পরিবর্তে নিজেরাই জমিতে মই দিচ্ছেন এই দম্পতি। এ কাজে পালাক্রমে কখনো স্বামীকে, কখনো স্ত্রীকে গরু এবং চাষির ভূমিকা রাখতে হচ্ছে তাদের।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের পবনাপুর (চরেরহাট) গ্রামে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

যেখানে খোলা প্রান্তরে ইরি-বোরো মৌসুমে আধুনিক কৃষিযন্ত্রের সাহায্যে জমি তৈরিতে ব্যস্ত আধুনিক কৃষকরা, সেখানে ব্যতিক্রম নেপেন- সুভাসিনি দম্পতি।

আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে ফের শৈত্যপ্রবাহের দাপট

তীব্র ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে পানিতে ভিজে জমি সমান করতে শরীরের সবটুকু শক্তি দিয়ে গরুর পরিবর্তে হালচাষ করছেন তারা। বাঁশের তৈরি মইয়ের দুপাশে দড়ি বেঁধে দুহাতে টেনে হাল চাষ করতে গরুর ভূমিকা রাখছেন সুভাসিনি এবং শক্ত হাতে মই চেপে রেখেছেন নেপেন। ফলে কাঁদাজলে ভেজা উঁচু-নিচু জমি সমান হয়ে চাষের উপযোগী হয়ে উঠছে।

সরেজমিন তথ্যানুসন্ধানে এ দম্পতি জানান, তাদের নিজেদের কোনো জমি নেই। অন্যের জমি চাষাবাদ করেই চলে তাদের জীবন ও জীবিকা ৷ প্রায় এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করেন তারা। আজ দশ শতক জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের জন্য মই দিচ্ছেন।

বর্গা নেওয়া জমি থেকে যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়, তার অর্ধেক দিতে হয় জমির মালিককে। বাকি ধান দিয়ে সারা বছরের দু'মুঠো ভাতের যোগান মেটাতে হয় তাদের। তাই টাকা দিয়ে গরুর হাল কিনতে অসমর্থ হওয়ায় গরুর পরিবর্তে নিজেরাই পরিশ্রম করে জমিতে মই দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন: মিয়ানমা‌র সেনাদের সমুদ্রপ‌থে ফেরত

তারা আরও বলেন, তাদের ৫ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে মাধব এসএসসি পাশ করেছে। ছোট ছেলে নিখিল, মেয়ে লক্ষ্মী ও প্রতিমা হাইস্কুলে পড়াশুনা করছে। এছাড়া অর্জুন নামে কোলের এক সন্তান রয়েছে তাদের।

পবনাপুর এক নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি চান মিয়া বলেন, নেপেন-সুভাসিনি দম্পতি আমার প্রতিবেশী। তারা জেলে পরিবারের সদস্য। সমাজে টিকে থাকার জন্য তারা জীবন যুদ্ধে অনেক কঠোর সংগ্রাম করে চলছেন।

আরও পড়ুন: সবজির বাজারে স্বস্তি

পবনাপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম বলেন, জমিতে পানি এবং হাল চাষের পর মাটি সমান করতে মই দেওয়া হয়ে থাকে। সাধারণত এ কাজটি গরু দিয়ে করা হয়। কিন্তু নেপেন-সুভাসিনি দম্পতি মূলত আর্থিক সংকটের কারণে নিজেরাই কাজটি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে এমন পশুর কাজ মানুষ করা সত্যিই অপমানজনক বলে মনে করছেন অত্র এলাকার সাধারণ মানুষ ৷ এটা মানবাধিকার লংঘনের মধ্যে পড়ে কিনা, এমনটিও জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন কয়েকজন সাধারণ কৃষক ৷

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলা বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস পালিত

ভোলা প্রতিনিধি: বর্ণাঢ্য আয়োজনে ভ...

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১৭ জন

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্ব...

সৌদি গেলেন ৪১৩ জন হজযাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছর পবিত্র হজের প্রথম ফ্লাইটের আনুষ্...

চিরনিদ্রায় শায়িত পাইলট আসিম

জেলা প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস...

মালয়েশিয়ায় ৯ বাংলাদেশি আটক

প্রবাস ডেস্ক : মালয়েশিয়ায় ৯ বাংলাদেশিসহ অর্ধশত অবৈধ অভিবাসীক...

ছেলের লাশ গামলায় নিয়ে গেলেন বাবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের মধ্যপ্র...

থাইল্যান্ডে হিটস্ট্রোকে ৬১ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : থাইল্যান্ডে তীব্র তাপপ্রবাহে ২০২৩ সালের...

সারা দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন স্থানে আজ ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা