নিজস্ব প্রতিবেদক, কুড়িগ্রাম: করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার সাতদরগাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ এখন স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীদের দখলে রয়েছে। শুধু তাই নয়, রীতিমতো শ্রেণিকক্ষ এখন গুদামঘরে পরিণত হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন দাঁড়িপাল্লা কিংবা ধান পরিমাপক মিটার দিয়ে ধান পরিমাপও করছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্রুত এগুলো সরিয়ে দেয়ার কথা জানিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক বিষয়টি জানেন বললেও স্থানীয় প্রভাবশালী ধান ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান ক্লাসরুমে ধান গুদামজাত করে দিব্বি চালিয়ে যাচ্ছেন ধানের ব্যবসা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলামের ভাগ্নে কামরুজ্জামান ৩টি ক্লাসরুমের শিক্ষার্থীদের বসার বেঞ্চ সরিয়ে সেখানে ধান সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। বর্তমানে রুম ৩টি গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছেন। সেখানে দাঁড়িপাল্লা বা ধান পরিমাপক যন্ত্র এনে প্রতিদিন ধান ক্রয়বিক্রয় করছেন।
ধান ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান বলেন, করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় বৃষ্টির কারণে ক্লাসরুমে ধান রেখেছি। এখন আকাশ ভাল আছে। আমি ধান সরিয়ে নিবো।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান জানান, আবহাওয়া খারাপ থাকায় ধান যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য ধান স্কুলের বারান্দায় রাখতে অনুমতি চেয়েছিল। এখনো যদি সড়ে গিয়ে না থাকে, তাহলে ঠিক করে নাই।
বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান প্রথমে ক্লাসরুমে ধান গুদামজাত করার ঘটনাটি জানেন না বলে দাবি করলেও, পরক্ষণে তিনি জানান আমি কয়েকদিন অসুস্থ থাকায় বিদ্যালয়ে যেতে পারিনি। তবে শুনেছি বৃষ্টির কারণে ধানগুলো শুকানোর পর অস্থায়ীভাবে স্কুলঘরে রেখেছে। আমি সরানোর ব্যবস্থা গ্রহন করছি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান, করোনাকালিন সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও সরকারি নির্দেশানুযায়ী বিদ্যালয় খোলার জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি রাখতে সকল প্রধান শিক্ষকদের বলা হয়েছে। এরপরও বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ধান মজুদ রাখতে দেয়া সম্পূর্ণ দায়িত্বে অবহেলার শামিল। সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষককে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।
সাননিউজ/ জেআই