টাঙ্গাইল সংবাদদাতা:
টাঙ্গাইলের সখিপুরে বনের ভেতর ফেলে যাওয়া সেই মা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর।
১৫ এপ্রিল বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুস সোবহান এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বনের ভেতর থেকে উদ্ধার করা ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে করোনা পরীক্ষা করা হলে তার করোনা শনাক্ত হয়নি। ওই নারীকে কয়েকদিন পর আবারও পরীক্ষা করা হবে। ওই নারী বর্তমানে আইসোলেশন বিভাগে ভর্তি রয়েছেন।
গত ১৩ এপ্রিল সোমবার রাতে তার সন্তানেরা করোনা আক্রান্ত সন্দেহে মাকে বনের ভেতর ফেলে রেখে পালিয়ে যান । ওই রাতে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাদিঘী গ্রামের বনের ভেতর থেকে ওই নারীকে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্ধার করে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তবে মায়ের চিকিৎসা না করিয়ে সন্তানদের এমন নিষ্ঠুর আচরণে অবাক হয়েছেন সবাই।
গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্না মিঞা জানান, বনের ভেতর অপরিচিত ওই নারীর চেঁচামেচির আর চিৎকারের শব্দ শুনে বিষয়টি ইউএনওকে অবগত করা হয়।
ইউএনও আসমাউল হুসনা লিজা বলেন, সোমবার রাত দেড়টার দিকে পুলিশ সদস্য ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নারীর পরিচয় জানি। ওই নারীর বাড়ি শেরপুর জেলার নালিতা বাড়ি উপজেলায়। তার সন্তানেরা গাজীপুরের সালনায় পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তার সন্তান-স্বজনরা রাতে করোনা সন্দেহে তাকে শাল-গজারির বনে ফেলে রেখে সকালে বাড়ি নিবে বলে আশ্বাস দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে রাতেই ঢাকায় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীনুর আলম জানান, গত কয়েকদিন ধরে ওই নারীর জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট, গলা-ব্যথা ও কাশি শুরু হলে আশপাশের বসতিরা তাদের তাড়িয়ে দেন। মঙ্গলবার একটি পিকআপভ্যান ভাড়া করে নালিতা বাড়ি যাওয়ার পথে রাতে সখিপুরে একটি শাল-গজারির বনে ওই নারীকে ফেলে সন্তানেরা পালিয়ে যায়।
ওই নারীর জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও গলা ব্যথা রয়েছে। রাতেই তাকে এ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। পরে মঙ্গলবার সকালে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসোলেশন বিভাগে ভর্তি করা হয়।
সান নিউজ/সালি