নিজস্ব প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন এক নেশাখোর স্বামী। পরে মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বিকাল ৪টার দিকে ওই নির্যাতিত গৃহবধূ রজনী আক্তারকে নিয়ে তার বাবা, মা ও ফুফু মারধরের কারণ জিজ্ঞাসা করতে স্বামীর বাড়ি গেলে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন ওই গৃহবধূর বাবা শামসুল হক, মা নারগিস বেগম ও ফুফু আলেয়া বেগমকেও পুনরায় পিটিয়ে গুরুতর জখম করছে।
আহত অবস্থায় তাদের মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ব্যথানাশক ইনজেকশন দিয়ে তাদের টঙ্গিবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বলেছেন বলে আহত শামসুল হক জানান।
জানাগেছে, বিগত ৩ বছর আগে সদর উপজেলার খানকা দালালপাড়া গ্রামের শামসুল হক এর মেয়ে রজনী আক্তার এর সাথে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামের বুড়ির বাড়ি এলাকার মৃত কাদির মিয়ার ছেলে দ্বীন ইসলামের (২৫) বিয়ে হয়। বৈবাহিক জীবনে তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
রজনীর বাবা শামসুল হক আরো জানান, বিয়ের পর জানতে পারি রজনীর স্বামী মাদকাশক্ত এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। সে বিভিন্ন সময় নেশা করার জন্য আমার মেয়েকে আমার বাড়ি হতে টাকা পয়সা নিয়ে দিতো বলতো।
গত ২১ মার্চ বিকালে আমার মেয়ে আমার বাড়ি হতে বেড়ানো শেষে তার স্বামীর বাড়ি গেলে তার স্বামী আমার বাড়ি হতে টাকা এনেছে কিনা জানতে চায়। রজনী টাকা নেয়নি বললে নিজ ঘরে রজনীকে আটকে ব্যাপক মারধর করে স্বামী দ্বীন ইসলাম।
রজনী জানান, আমাকে কাঠের দাসা দিয়ে পিটিয়ে প্রথমে মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে জখম করে। পরে আমার দু-হাত বাঁধে। আমার গলার ওড়না পেঁচিয়ে আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে।
এলাকাবাসী আমার বাবাকে খবর দিলে তিনি এসে প্রথমে আমাকে টঙ্গিবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। পরে বাবা আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এনে অভিযুক্ত দ্বীন ইসলামকে আসামি করে টঙ্গিবাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন নির্যাতিতার বাবা সামছুল হক। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে দ্বীন ইসলাম।
রজনীদের নিয়ে যাওয়া অটোরিকশা চালক জানান, মারধরের পর এরা আমার গাড়িতে চলে আসার জন্য ওঠে। তারপরেও ১০ থেকে ১২ জন এসে মেয়েকে কিল, ঘুষি মারে। আমার অটোরিকশায়ও লাঠি দিয়ে বারি দেয়।
এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মো. হারুন আর রশিদ জানান, অভিযোগ পেয়েছি। যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এন/কেটি