নিজস্ব প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও : পাওনা ১ হাজার টাকার জন্য যুবলীগ নেতা বাজারে প্রকাশ্যে আব্দুল গফুর (৪০) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে পিটিয়েছে। শুধু তাই নয়, মারপিটের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে। আর অপমান সহ্য করতে না পেরে ওই ব্যবসায়ী গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। সেই সাথে মৃত্যুর আগে ভিডিওতে জানিয়ে গেছেন তার মৃত্যুর কারণ। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের সনগাঁও ফটিয়াপাড়া গ্রামে মাছ ব্যবসায়ি আব্দুল গফুর বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল বেলা স্থানীয় পৌকানপুর বাজারে যায়। তাকে বাজারে পেয়ে পাওনা এক হাজার টাকা নিয়ে বচসা ঘটায় ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা জমির উদ্দীন। এক পর্যায়ে ওই যুবলীগ নেতা তাকে মারধোর করে এবং ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে। এতে অপমানিত হয়ে গফুর ঔষধের দোকান থেকে গ্যাস ট্যাবলেট কিনে নিয়ে যায় এবং তা খেয়ে আত্মহত্যা করে।
মৃত আব্দুল গফুর ওই গ্রামের নেনকু মোহাম্মদের ছেলে।
আব্দুল গফুরের স্ত্রী রোজিনা বেগম জানান, সকালে পাশের গ্রামের পয়জার আলীর ছেলে যুবলীগ নেতা জমির উদ্দীন টাকা চাইতে দুবার বাড়ীতে আসেন। আমার স্বামীকে না পেয়ে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে। পরে বাড়ী থেকে রেগে বেরিয়ে যান। এরপরে পৌকানপুর বাজারে দেখা হলে বাজারের মধ্যে তাকে মারপিট করে।
প্রতিবেশী নাসিরুল ইসলাম জানান, আমরা গফুরকে বাঁচানোর জন্য বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতাল ও ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায়, গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়া রোগীকে বাঁচানো সম্ভব নয়। পরে তাকে বাড়ীতে নিয়ে আসলে দুপুর ৩টায় তিনি মৃত্যবরণ করেন ।
মৃত্যুর আগে আব্দুল গফুর একটি ভিডিও বার্তায় প্রকাশ করে যে, পাওনা টাকার জন্য বাজারে গালিগালাজ ও মারপিটের অপমান সহ্য করতে না পেরে আমি গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছি।
মাত্র ১ হাজার টাকার জন্য এমন প্রকাশ্যে মারপিট করার কারণে ও আত্মহননে বাধ্য করার দায়ে যুবলীগ নেতার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৃত ব্যবসায়ির পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা জমির উদ্দীনকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বালিয়াডাঙ্গী থানার পুলিশ পরিদর্শক হাবিবুল হক প্রধান জানান, আমাদের মোবাইলে ঘটনার বিষয়ে জানালে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত: ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সান নিউজ/বিআইবি/এনকে