নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর একুশে পদক পাচ্ছেন ২১ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন টাঙ্গাইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান খান ফারুক।
একুশে পদক সংক্রান্ত সাব-কমিটির এক সভায় ২২০ জনের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মোট ৪৫ জনের নাম প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হয়। জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত বাছাই-যাচাই মন্ত্রীসভা কমিটি অবশেষে ২১ জনের নাম সুপারিশ করে। এই সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলে বৃহস্পতিবার তিনি অনুমোদন দেন।
টাঙ্গাইলের রাজনীতি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ক্রীড়া, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ও সংস্কৃতি হিতৈষী উপাধিতে ভূষিত হয়ে অদ্যাবধি কর্মক্ষেত্রে সক্রিয় আছেন ফজলুর রহমান খান ফারুক। মহান মুক্তিযুদ্ধে রয়েছে তার অসামান্য অবদান। সেই অবদানের স্বীকৃতি হিসেবেই ফজলুর রহমান খান ফারুক এবার মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে একুশে পদক পাচ্ছেন।
শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়, ফজলুর রহমান খান ফারুক ভাষা আন্দোলনের সক্রিয় সাক্ষী, বয়োকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য, স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতাদের একজন। তিনি জেলা পরিষদের প্রশাসক-চেয়ারম্যান, সুবক্তা, ক্রীড়া সংগঠক।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শি গ্রামে ১৯৪৪ সালের ১২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন ফজলুর রহমান খান ফারুক। তার বাবার নাম আব্দুল হালিম খান ও মাতার নাম ইয়াকুতুন্নেছা। গ্রামের পাঠশালাতেই দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করেন তিনি। তারপর চলে আসেন টাঙ্গাইল শহরে। ভর্তি হন বিন্দুবাসিনী হাই স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে। মেট্রিক পাস করেন একই স্কুল থেকেই। স্কুলে পড়া অবস্থায় তিনি জড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে। ক্রীড়া ক্ষেত্রেও ঝোঁক বেড়ে যায় অনেক। বালক বেলায় তবলা চর্চাও করেছেন। মেট্রিক পাস করার পর তিনি ভর্তি হন ঢাকার জগন্নাথ কলেজে। সেখানকার হোস্টেলেই থাকতেন তিনি। সেখান থেকে চলে এসে ভর্তি হন করটিয়া সা'দত কলেজে।
সাহিত্য-সংস্কৃতিতে তার রয়েছে অসামান্য অবদান। এজন্য তিনি টাঙ্গাইলে 'সংস্কৃতি হিতৈষী' হিসেবে পরিচিত। অনেক স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তার ব্যাপক অবদান রয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাকের টাঙ্গাইল মহকুমা প্রতিনিধি হিসেবে তিনি সাংবাদিকতার জগতে আলো ছড়িয়েছেন। এখন তিনি দৈনিক আজকের দেশবাসী পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক।
ফজলুর রহমান খান ফারুক একজন ক্রীড়ানুরাগী, একজন ক্রীড়া সংগঠক। একজন ক্রীড়াবিদও তিনি। ওয়াইএমএস ক্লাকের হয়ে এক সময় শহর মাতিয়েছেন। টাঙ্গাইলের ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ফজলুর রহমান খান ফারুক টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ছিলেন দীর্ঘ ২৫ বছর। ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট উপ-পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন ২৫ বছর। ক্রিকেট থেকে ২০০৮ সালে তিনি চলে আসেন ফুটবল এসোসিয়েশনে। এখানে সভাপতি হিসেবে যোগ দিয়ে বর্তমান পর্যন্ত এই দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করছেন।
সান নিউজ/এসএস