ফিচার
হারিয়ে গেল মসলিন

বোনা হতো ফুটিকার্পাসের সুতোয়

আহমেদ রাজু

মসলিন তৈরি হতো আদি ফুটি কার্পাস গাছ থেকে। বৈজ্ঞানিক নাম ‘গসিপিয়াম আরবোরিয়াম ভার নেগলেক্টা’ (Gossypium Arboreum Var Neglecta)। চরকা দিয়ে কাটা হাতে বোনা মসলিনের জন্য সর্বনিম্ন লাগতো ৩০০ কাউন্টের সুতো। সুতোর কাউন্ট চার-পাঁচশও হতো। মুঘল শাসকরা ৬০০ কাউন্টের সুতা দিয়ে তৈরি মলমল খাস পড়তেন।

আদি মসলিনের গাছ ফুটি কার্পাসের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য ছিলো। এক. সাধারণ তুলাগাছে পাতার আঙুল তিনটি, ফুটি কার্পাসের পাঁচটি। দুই. গাছের কাণ্ড লালচে হয়। তিন. গাছের উচ্চতা সাধারণ তুলাগাছের মতো নয়, একটু কম। চার. তুলা খুব বেশি হয় না ও পুরো ফুটে যাওয়ার পর নিচের দিকে মুখ করে থাকে (এখনকার বেশির ভাগ তুলা সাধারণত ওপরের দিকে মুখ করে থাকে), ফলে মসলিনের তুলা বৃষ্টিতে নষ্ট হয় না। পাঁচ. বছরে দুবার ফলন দেয় এ তুলাগাছ।

কিন্তু আদি ফুটিকার্পাসের এ প্রজাতিটি এখন বিলুপ্ত। এই কার্পাসগাছ থেকে মসলিন তৈরির জন্য হাতে যে সুতা কাটা হতো, তার এক একটা সুতোর ব্যাস ছিলো এক ইঞ্চির একহাজার ভাগের একভাগ থেকে পনেরশ ভাগের একভাগ।

১ পাউন্ড অর্থাৎ প্রায় ৪০০ গ্রাম ওজনের ১ নল সুতার দৈর্ঘ্য ছিলো প্রায় ২৫০ মাইল। ১ ইঞ্চির ১৫০০ ভাগের ১ ভাগ মাপের সূক্ষ্ম সুতার মসলিন বুনতে স্থানীয়ভাবে তৈরি ১২৬টি বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হতো। ১৭৫ গজ বা ৩৫০ হাত মসলিন এক সঙ্গে করলে কবুতরের একটি ডিমের সমান হতো।

বিস্ময়কর হচ্ছে—চল্লিশ হাত লম্বা আর দুই হাত চওড়া মসলিন কাপড় একটা আংটির ছিদ্র দিয়ে পার করা যেতো।

১৮৫১ সালে লণ্ডনে এক প্রদর্শনীতে ঢাকা থেকে মসলিন পাঠানো হয়েছিলো। প্রদর্শনীর সময় ‘লণ্ডন ক্রনিকলের’ এক রিপোর্টে বলা হয়, ‘হাবিব্বুল্লাহ তাঁতীর বোনা একখণ্ড দশ গজ মসলিনের ওজন মাত্র তিন আউন্স।’

জেমস টেলর লিখেছেন, বর্ষায় মেঘনা নদীর পানি এসে সোনারগাঁও এবং আশপাশের গ্রামগুলো তলিয়ে যেতো। বন্যার পানিবাহিত পলিমাটি জমিতে পরায়, খুব ভালো মানের তুলা হতো। আর মসলিন তৈরির জন্য সেখানকার আবহাওয়াও ছিলো উপযোগী।

সান নিউজ/আরআই-২

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জামায়াত, এনসিপির শর্তের চাপে বিএনপি, নির্বাচন নিয়ে নতুন শঙ্কা

বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে আন্দোলনে নামার...

পাথর তোলায় রাজনৈতিক দলের ‘ঐকমত্য’, পরে লুট

বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ থাকলেও পাথর উত্তোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর স্থান...

যমুনা সেতুর পশ্চিমে মহাসড়ক অবরোধ, বিচ্ছিন্ন ঢাকা-উত্তরবঙ্গ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রক...

যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে, রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে: সালাহউদ্দিন

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প...

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ৫ উপজেলার বহু মানুষ পানিবন্দি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে...

দেব–শুভশ্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়

দীর্ঘ বিরতির পর সাবেক প্রেমিক জুটি দেব ও শুভশ্রী পর্দায়। কৌশিক গাঙ্গুলীর &lsq...

নির্বাচনের রোডম্যাপ আগামী সপ্তাহে, আশা ইসির

আগামী সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণা করতে পারব...

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কাল

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা করতে আগামীকাল শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ব...

দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী

মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী। পাকিস্তানের বাণ...

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ৫ উপজেলার বহু মানুষ পানিবন্দি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা