আহমেদ রাজু
৮ নভেম্বর, ১৯৫৬। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নিহত হন হাঙ্গেরিয় কিশোরী এরিকা কর্নেলিয়া জিলিস। তখন এরিকার বয়স ছিলো মাত্র পনেরো।
পড়তেন ডবোস সি ক্যাটারিং স্কুলে। ছিলেন হোটেল বাইকের শিক্ষানবিশ কুক। এরিকা একজন বিপ্লবী। একজন মুক্তিযোদ্ধা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়া, হাঙ্গেরিয়ায় সাম্যবাদী সরকার বসায়। ক্ষমতার আসনে হাঙ্গেরিয়ার রাজনৈতিক নেতারা থাকলেও দেশ চালাতো সোভিয়েত ইউনিয়ন। সেখানে রাশিয়া যে নীতি প্রবর্তন করে তা মানতে পারেনি হাঙ্গেরিয়ার জনগণ। তাদের মনে ক্ষোভ জমতে থাকে। কিন্তু কারও কিছু বলার সাহস ছিলো না।
রাশিয়ার নীতির বিরুদ্ধে প্রথমে ছাত্ররা প্রতিবাদ জানায়। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি। শেষে ছাত্ররা সোভিয়েত সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে।
১৯৫৬ সালের ২৩ অক্টোবর। ছাত্ররা লাগাতার প্রতিবাদ কর্মসূচী ঘোষণা করে। কিন্তু তাদের দাবির প্রতি সম্মান না দেখিয়ে ছাত্রদের গণগ্রেফতার শুরু করে। বিক্ষোভ থামাতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে রাশিয়া।
এতে আরও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্ররা। ছাত্রদের সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। একপর্যায়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ছাত্ররা। সৈন্যরা ছাত্রদের উপর গুলি করলে তারাও পাল্টা গুলি চালায়। দেশ উত্তাল হয়ে উঠে।
চলমান যুদ্ধের মধ্যে রাশান সৈন্যদের গুলিতে ৮ নভেম্বর বুদাপেস্টের রাজপথে নিহত হন এরিকা। তার দুইদিন পর ১০ নভেম্বর সরকারের পতন ঘটে।
মহান বিপ্লবী এরিকার জন্ম ৬ জানুয়ারি, ১৯৪১। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে। পৃথিবী বদলে দেয়া নারীর তালিকায় এরিকার নাম রয়েছে প্রথম দিকে।
ফটো—ভেগান হানসেন
সান নিউজ/ আরএস-১১