জেলা প্রতিনিধি : গত কয়েক সপ্তাহের তীব্র তাপদাহে ও খরায় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন আম, ধান, কলাসহ বিভিন্ন ফসল চাষিরা। তাই দফায় দফায় আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির জন্য ইসতেসকার নামাজ আদায় করেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
আরও পড়ুন : ৪১ জেলায় তাপদাহ, শিলা বৃষ্টির সম্ভাবনা
বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল ৪ টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী জেলা জুড়ে প্রবল বৃষ্টি হয়।
জেলাজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টির খবর পাওয়া গেলেও শিলাবৃষ্টি হয়েছে বেশ কিছু এলাকায়। শিলাবৃষ্টিতে নাচোল, ভোলাহাট ও ভারতীয় সীমান্তবর্তী সদর উপজেলার নারায়ণপুর ও শিবগঞ্জের পাঁকা ইউনিয়নে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রাম-৮ আসনে ভোট গ্রহণ শুরু
সদর উপজেলার নারায়নপুরের ধান চাষি তরিকুল ইসলাম জানান, ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার ৭ বিঘা জমিতে ধান ছিল। আধা ঘণ্টার শিলাবৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে। গাছে থাকা সব ধান ঝরে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, লাখ টাকার উপরে ধার করে ধান চাষ করেছিলাম। এখন জমি থেকে কিছুই পাব না। জমিতে শুধু ধানগাছ পড়ে রয়েছে। অথচ এক সপ্তাহের মধ্যেই ফসল কেটে ঘরে তুলতাম। এখন নিঃস্ব হয়ে গেলাম।
আরও পড়ুন : অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী
শিবগঞ্জের পাঁকা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁকা গ্রামের কৃষক মাজেদুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির মতো করে মুষলধারে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ৪ বিঘা কলা ও আড়াই বিঘা ধানের উপর দিয়ে বয়ে গেছে বৃষ্টি। সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে।
তিনি জানান, শুধু আমার নয়, দিয়াড় অঞ্চলের সব জমিতে এমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সব জমির ধান মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। সেখান থেকে কোনো ফসল ঘরে তুলতে পারব না।
আরও পড়ুন : ১৩ পৌরসভার বিষয়ে ইসিকে চিঠি
নাচোল উপজেলার নেজামপুর এলাকার কৃষক আশরাফ আলী বলেন, আমার জমিতে পাঁকা ধান ছিল। ছোট ছোট শিলাবৃষ্টিতে ধান ঝরে পড়েছে। আধা ঘণ্টার শিলাবৃষ্টিতে সব শেষ হয়ে গেছে।
সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের নশিপুর গ্রামের আম চাষি মোজাম্মেল হক জানান, আমাদের এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু শিলাবৃষ্টি হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ এই বৃষ্টি আমের জন্য খুবই উপকারে আসবে। আমের ঝরে পড়া বন্ধ হবে এবং দ্রুত বাড়বে।
আরও পড়ুন : মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
তবে নাচোল, ভোলাহাট উপজেলায় শিলাবৃষ্টির কথা শোনা গেছে। এতে আমের জন্য ব্যাপক ক্ষতি হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, জেলাজুড়ে বৃষ্টির সাথে বিভিন্ন উপজেলায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছ। এতে ফসলের কত পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আমাদের প্রতিনিধিরা মাঠে রিপোর্ট সংগ্রহ করছেন। তাদের দেওয়া তথ্য হাতে পেলে বিস্তারিত ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশিদের ফেরাতে হটলাইন চালু
প্রসঙ্গত, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। চলতি বছরে আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন।
গত বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে কৃষি বিভাগ জেলায় আম উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন।
আরও পড়ুন : শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক’র প্রয়াণ
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি বছরে ৫১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বেরো ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯৭২ মেট্রিন টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।
সান নিউজ/এনজে
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            