ব্যয় কমিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত তেল উৎপাদন, সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষক (ছবি সংগ্রহ : কামরুজ্জামান স্বাধীন)
বাণিজ্য
ব্যয় কমিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত তেল উৎপাদন

সরিষা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষক

কামরুজ্জামান স্বাধীন, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুরে সরিষা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। দাম ও চাহিদার উপর নির্ভর করে উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরাঞ্চালের ৪১ হাজার ৬০ জন কৃষক চলতি অর্থ বছরে সরিষা চাষে নতুন মাত্রায় যাত্রা শুরু করেছে।

আরও পড়ুন : স্ত্রীর শরীরে গরম ডাল ছুড়ে দিল পাষণ্ড স্বামী

স্থানীয়ভাবে তেলের চাহিদা পুরণসহ সরিষার শুকনো গাছগুলো জ্বালানির কাজে সহায়তা করবে বলে আশা করছেন প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক।

ইতোমধ্যে কৃষকের স্বপ্ন বুননসহ হলুদ ফুলে সেজেছে সরিষা চাষের জমি এবং সে জমিতে মৌ মৌ গন্ধে চতুর্দিক ছড়িয়ে পড়ছে। পথচারিরা সে গন্ধে মুগ্ধ হচ্ছেন। জমিগুলোতে মৌ মাছিরাও মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত হয়ে পরছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে, গত অর্থ বছরে ৬১০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল এবং কৃষক কিছুটা লাভবান হয়েছিল। চলতি অর্থ বছরে ৭১০ হেক্টর জমি সরিষা চাষের জন্য নির্ধারাণ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১.৮২ টন। মোট উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৯২.২০ টন। এখানে ৮০ টি জমিতে প্রদর্শনী রয়েছে।

আরও পড়ুন : বিএনপির ১৯ নেতাকর্মী গ্রেফতার

এ উপজেলাটি ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদী বেষ্টিত হওয়ায় প্রতি বছরই প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষক কোনো কোনো ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। সে দিকটি বিবেচনা করে কৃষি অধিদপ্তর সারা দেশের ন্যায় এই উপজেলার কৃষকদের প্রণোদনা স্বরুপ ৪১হাজার ৬০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সার বীজ দিয়েছে।

জনপ্রতি কৃষকের জন্য ৩৩ শতক জমি নির্ধারণ করে উপশী জাতের বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষক বরাবর বোরো ও আমন এই দুটি ধান চাষেই বেশি আগ্রহী কিন্তু সমসাময়িক সময়ে উৎপাদনের সাথে ব্যয়ভার বেড়ে যাওয়ায় নতুন নতুন উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

বিগত বছরগুলোতে যে যৎ সামান্য সরিষা চাষ হতো তা ব্রহ্মপুত্র নদ ও তিস্তা নদীর বুকের উপর জেগে ওঠা চরের উপর হতো। এ বছর সর্ব পর্যায়ের জমিতেই সরিষার চাষ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলন হবে এমনটাই আশা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।

আরও পড়ুন : শেখ হাসিনাকে পুনরায় সভাপতি করার দাবি

উলিপুর পৌরসভার নারিকেল বাড়ী গ্রামের কৃষক হাছান আলী জানান, দীর্ঘ সময় বিদেশে ছিলাম, কয়েক বছর হল দেশে অবস্থান করছি। কৃষির সাথে আদিম পরিচয় থাকলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে খাপ খাইয়ে উঠতে পারিনি।

গত বোরো মৌসুমে ৪০ শতক জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলেন, কারেন্ট ভাইরাসের আক্রমনে ৩দিনের মধ্যেই পুরো জমির ধান গাছ পুড়ে গেছে এ কথাও জানালেন ওই কৃষক। সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা ব্লক সুপারভাইজার সাইদুর রহমান তাঁকে সরিষা চাষের পরামর্শ দেন সে পরামর্শ মোতাবেক সরিষা চাষ করেন। একই কথা জানান ওই গ্রামের কৃষক জালাল, শাহজাহান ও মজিবর।

চরাঞ্চল ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ব্লক সুপারভাইজারের আওতায় ৭০-৮০ জন কৃষক সরিষা চাষ করেছেন। স্বল্প সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ের ফসল হওয়ায় কৃষিবীদগণ আশা করছেন, দিন দিন সরিষার উৎপাদন বাড়বে।

আরও পড়ুন : বার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করায় কিশোরীর আত্মহত্যা

বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক আলতাফ, বজরা ইউনিয়নের কৃষক নুরনবী, গুনাইগাছ ইউনিয়নের কৃষক ভবেষ জানালেন, দাম ভালো পাওয়ার আশায় বাংলাদেশ সরকারের দেয়া প্রণোদনায় সরিষা চাষ করেছি। নিজেদের তেল ও জ্বালানি চাহিদা পুরণ করে রপ্তানির স্বপ্নও দেখছেন।

ইতোমধ্যে কোনো কোনো সরিষার গাছে, দানা আসতে শুরু করেছে। তারা আরও জানান, বিঘা প্রতি ৫-৬ মন সরিষা উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন।

কুয়াশা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে সরিষার ক্ষতি হতে পারে কি না এই বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা সাহেবের আলগার ব্লক সুপারভাইজার সাহেদুর রহমান জানান, ৮০-৯০ দিনের প্রজেক্ট সরিষা চাষ। যে পরিমান কুয়াশা পরেছে তাতে গাছ, ফুল ও ফলের তেমন ক্ষতি করতে পারবে না, এটিই সরিষা চাষের জন্য উত্তম সময়।

আরও পড়ুন : আগ্নেয়াস্ত্র ও ইয়াবাসহ যুবক গ্রেফতার

তবে দীর্ঘ সময় কুয়াশা চলতে থাকলে কিছুটা ক্ষতি হতে পারে সে বিষয়ে কৃষকের দাড়ে দাড়ে গিয়ে সুপরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জানান, দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলের কৃষকদের সরিষা চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে তেলের চাহিদা পুরণসহ ব্যয়ভার কমানো এবং নিরাপদ তেল খেয়ে স্বাস্থ্য সম্মত থাকা।

তিনি আরও জানান, কৃষককে আধুনিকভাবে সকল প্রকার চাষাবাদ করার জন্য সব সময় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কোচিং সেন্টারে মিলল বিপুল অস্ত্র-বিস্ফোরক

রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়ি থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ, যুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

ফের ৯৮ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

ফের কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে ৯৮ বাংলাদেশিকে। বিম...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ

দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ, যুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা