বাণিজ্য

বারোমাস আবাদযোগ্য উচ্চমাত্রার জিংক সমৃদ্ধ ব্রি ধান-১০০

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাবছর আবাদযোগ্য আরও নতুন একটি ধানের জাত উদ্ভাবণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। আসছে নতুন জাতের ধানের প্রস্তাবিত নাম ব্রি ধান-১০০। উচ্চমাত্রার জিংক ও পুষ্টিসমৃদ্ধ চাল হবে এটি। এতে জিংকের পরিমাণ ২৫ দশমিক ৭ মিলিগ্রাম/কেজি। দানায় এ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া প্রোটিনের পরিমাণ ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা ২০০৬ সাল থেকে এই ধানের জন্য গবেষণা শুরু করেন। ৫ বছর ফলন পরীক্ষার পর ২০১৭ সালে ব্রির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর গবেষণা মাঠে এবং ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষক মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরে ২০২০ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি স্থাপিত প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফল পাওয়া যায়।

জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়ন দলের সুপারিশের পর জাত হিসেবে ছাড়করণের জন্য আবেদন করা হয়। ধানটি গবেষণার সঙ্গে জড়িত ছিলেন ধানবিজ্ঞানী ড. মো. আব্দুল কাদের। তিনি জানান, আগে থেকেই জিংক-সমৃদ্ধ ব্রি ধান-২৮ এবং ব্রি ধান-২৯ বাজারে রয়েছে। এ দুটি ধানে জিংকের পরিমাণ ১৫ থেকে ১৬ মিলিগ্রাম/কেজি। এছাড়া ব্রি ধান-৭৪-এ জিংকের পরিমাণ ২৪ দশমিক ২ মিলিগ্রাম/কেজি।

কিন্তু নতুন এই জাতে জিংকের পরিমাণ ২৫ মিলিগ্রাম/কেজি বেশি। অন্যান্য চালে প্রোটিনের পরিমাণ ৭ বা ৭ শতাংশের নিচে থাকে। কিন্তু এই চালে প্রোটিনের পরিমাণ ৮ শতাংশের কাছাকাছি। সারা দেশেই বোরো মৌসুমে এই জাতের ধান আবাদ করা যাবে বলে জানান তিনি। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের এই প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, উচ্চমাত্রায় জিংকের অভাবে মানুষ খাটো হয়।

এছাড়া ক্ষুধামন্দা, ডায়রিয়া হয়। তাই বাংলাদেশে মানুষের এসব সমস্যা সমাধানে এই চাল ভূমিকা রাখবে। এই চালের ভাত খেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেড়ে যাবে বলে জানান তিনি। ব্রি জানিয়েছে, ব্রি ধান-১০০তে আধুনিক উফশী ধানের সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এছাড়া অঙ্গজ অবস্থায় গাছের আকার ও আকৃতি ব্রি ধান-৭৪-এর মতো। এই জাতের ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা, পতার রং সবুজ।

পূর্ণবয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০০ সেন্টিমিটার। জাতটির গড় জীবনকাল ১৪৮ দিন। ১ হাজার পুষ্ট ধানের ওজন গড়ে ১৬ দশমিক ৭ গ্রাম। চালের আকার-আকৃতি মাঝারি চিকন এবং রং সাদা। ব্রি ধান-৮৪-এর চেয়ে এ জাতের ফলন প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি। ব্রি ধান-১০০-এর গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৭ দশমিক ৭ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে অনুকূল পরিবেশে হেক্টরপ্রতি ৮ দশমিক ৮ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। ব্রি ধান-১০০-এ রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত জাতের চেয়ে অনেক কম হয়।

কৃষকেরা এই ধান কীভাবে আবাদ করবেন, সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ধানের চাষাবাদ পদ্ধতি ও সারের মাত্রা অন্যান্য উচ্চফলনশীল ধানের মতোই। ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর, অর্থাত্ অগ্রহায়ণের ১ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে বীজ বপন করতে হবে। মাঝারি উঁচু থেকে উঁচু জমি এই ধান চাষের জন্য উপযুক্ত। ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, জিংক সালফেট প্রয়োগ করতে হয়।

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ইউক্রেনে এক রাতে ৬০০’র বেশি ড্রোন-মিসাইল হামলা চালাল রাশিয়া

রাশিয়া এক রাতে ইউক্রেনের দিকে ৫৭৪টি ড্রোন ও ৪০টি মিসাইল ছুড়েছে—যা সাম্প...

‘১% মিডিলম্যান, ৫% মিনিস্ট্রির’

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রেস সেক্রেটারির বিরুদ...

ভাত না জোটার দেশে হাঁসের মাংসবিলাস শোভনীয় নয়: আলাল

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, দুই...

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিলের রায় ৪ সেপ্টেম্বর

আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা মামলার সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে...

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ অনুমোদন

‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নীতিগত...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা