বাণিজ্য

পাটকল বন্ধ হওয়ায় কাঁচা পাট নিয়ে শঙ্কায় রপ্তানিকারকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার একযোগে ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ ঘোষণা করায় বিপুল পরিমাণ কাঁচা পাট উদ্বৃত্ত থেকে যাবে বলে আশঙ্কা করছে প্রন্তি কৃষকসহ এ খাতের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টরা। দেশের পাটকলগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের পর এবার নতুন সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে কাঁচা পাট নিয়ে। করোনার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের চাহিদা কমে যাওয়ায় দেশে বিপুল পরিমাণ কাঁচা পাট উদ্বৃত্ত থেকে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বর্তমানে দেশে প্রায় ৮০ লাখ বেল পাট উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে রপ্তানি হয় ৮ থেকে ৯ লাখ বেলের মতো। করোনা মহামারীর কারণে বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়ায় এবার রপ্তানি আরও কমে যেতে পারে। বাকি পাট সরকারি-বেসরকারি পাটকলগুলো চাহিদা অনুযায়ী কিনে নেয়। এ পরিস্থিতিতে কাঁচা পাট রপ্তানিতে নতুন করে আর শুল্কারোপ না করার সুপারিশ করে এ খাতের সমস্যা সমাধানে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ জুট এসোসিয়েশন।

তারা কাঁচা পাট রপ্তানি খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত খাত বিবেচনা করে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা সুবিধা চেয়েছেন। এ ছাড়া পাট খাতের সমস্যা সমাধানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি সমন্বয় কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন।জুট এসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে দেশে প্রায় ৮৪ লাখ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। দেশের সরকারি-বেসরকারি জুটমিলগুলোর সারা বছরের পাটের চাহিদা ৪০ থেকে ৪৫ লাখ বেল। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় জুটমিলগুলো প্রতিবছর ১২ থেকে ১৩ লাখ বেল পাট ক্রয় করে।

এ বছর পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা এ পরিমাণ পাট কিনবে না। এরমধ্যে মজুদকৃত প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ বেল পাট বাজারে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য তুলে ধরে গত ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো চিঠিতে জুট এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী উল্লেখ করেন, এ বছরও প্রচুর কাঁচা পাট উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আমরা মনে করি। আমাদের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৮ থেকে ৯ লাখ বেল।

বৈদেশিক বাজারে চাহিদা কমে যাওয়ায় চেষ্টা করলেও এর বেশি পাট রপ্তানি করা যাবে না। চলতি বছর পাট রপ্তানি আরও কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ লাখ ২৫ হাজার বেল রপ্তানি হলেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে হয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার বেল। কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এ বছর আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের চাহিদা আরও কমে যেতে পারে।

ফলে উৎপাদিত পাট কৃষকের বোঝা হয়ে দাঁড়াবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। তবে কাঁচা পাট নিয়ে উল্টো কথাও চালু রয়েছে বাজারে। সরকারি পাটকল বন্ধ হলেও করোনা মহামারীর কারণে পাটের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কম হয়েছে। এই তথ্য দিয়ে উল্টো কাঁচা পাট রপ্তানির রেশ টেনে ধরার সুপারিশ জানিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে জুটমিল স্পিনার্স এসোসিয়েশন।

তারা কাঁচা পাট রপ্তানিতে সুনির্দিষ্ট শুল্কারোপ করার প্রস্তাব দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জুট এসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ শিপার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, বেসরকারি পাটকল মালিকরা সরকারকে উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে অনেক সময় বাংলাদেশের কাঁচা পাটের আন্তর্জাতিক বাজার নষ্ট করেছে।

তিনি বলেন, সরকার কাঁচা পাট রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় বাজার সংকুচিত হয়েছে। ফলে যত চেষ্টাই হোক না কেন উৎপাদিত পাটের মধ্যে ১০ লাখ বেলের বেশি রপ্তানি করা সম্ভব হবে না। তবে কাঁচা পাট রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা থাকলেও কৃষকদের ক্ষতি হবে না বলে মনে করেন তিনি। রেজাউল করিম বলেন, এবার পাট মৌসুম শুরুর পর এখনো পর্যন্ত কৃষকরা দাম ভালোই পাচ্ছেন। গ্রেডভেদে আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে কাঁচা পাট।

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা