নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমালোচনা থেকে যদি কোনো সংশোধন করতে হয়, আমরা সেটা করে নেব এবং আমরা সেটা করে থাকি। সেখানে আপনাদেরও কিছুটা দায়িত্ব আছে। স্বাধীনতা ভোগ করবেন, সঙ্গে দায়িত্ববোধও থাকতে হবে। দেশ ও জাতির জন্য কর্তব্যবোধ থাকতে হবে।
আরও পড়ুন : কিন্ডারগার্টেনে ছুরি হামলায় নিহত ৬
সোমবার (১০ জুলাই) সকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের করবী হলে অসুস্থ, অসচ্ছল সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকার গঠন করার সময় হাতেগোনা কয়েকটি সংবাদপত্র ছিল। তখন অবাধে সংবাদ যাতে প্রকাশিত হতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি। প্রথমে ৩ টি প্রাইভেট চ্যানেলের অনুমতি দিয়েছি, তারপর এটি বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন : স্পেনে যাওয়ার পথে নিখোঁজ ৩০০
সেই সময় অনেকে বাধা দিয়েছিল, প্রাইভেটে টিভি চ্যানেল দেওয়া ঠিক হবে কি না? আমি যখনই যে কাজ করেছি, সেখানে লক্ষ্য ছিল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। তখন আমি বলেছিলাম, যত বেশি টেলিভিশন দিতে পারবো সেখানে সাংবাদিক থেকে শুরু করে বহু ধরনের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সাংবাদিক, শিল্পী, টেকনিশিয়ানসহ বহু মানুষ কাজ পাবে, তাদের জীবন চলতে পারবে। সেভাবেই আমরা টেলিভিশন উন্মুক্ত করে দেই।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এক সময় সাংবাদিকতা করেছেন। তার আত্মজীবনী পড়লে আপনারা সেটি জানতে পারবেন। শুধু সাংবাদিকতা নয়, তিনি পত্রিকা বিক্রির কাজও করেছেন। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে আমি আপনাদের পরিবারের একজন সদস্য।
আরও পড়ুন : জুনে সড়কে ঝড়ল ৫০৪ প্রাণ
শেখ হাসিনা বলেন, '৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি তখন মাত্র ১ টি টেলিভিশন ছিল, সেটাও সরকারি টেলিভিশন। সংবাদপত্র ছিল কয়েকটি। স্বাধীনতার সময় অনেক সংবাদপত্র হানাদার বাহিনী পুড়িয়ে দিয়েছিল। জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল এ দেশের জনগণের যেন মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বেসরকারি খাতের জন্য বিশেষ আইন করে বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করে অল্প সময়ের মধ্যে ৪৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছিলাম। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে দেখি সেখান থেকে কমে ৩৮০০ মেগাওয়াট হয়ে গেছে। আমরা সেখান থেকে ২৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে পেরেছি।
আরও পড়ুন : দেশে ফিরেছেন ৩৩৬২৭ জন হাজি
আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা না নিলে চিন্তা করে দেখেন সেটা ৩৮০০ মেগাওয়াটে থাকত। হয়ত ১০০ থেকে ২০০ করে বাড়তো। এখনো অনেকে সমালোচনা করে। আমি মনে করি, সেই সমালোচনাটা গঠনমূলক হওয়া উচিত। শুধু বলার জন্য বলা না।
সরকারপ্রধান বলেন, বিরোধীদল তো বলবেই, তারা সারাদিন কথা বলে, টক শো করে, টক শোতে ইচ্ছে মতো যা খুশি তাই বলে যাচ্ছে। কথা বলার পরে বলবে কথা বলার স্বাধীনতা দেয়নি। স্বাধীনতা ছিল কখন? আইয়ুব খানের আমলে ছিল? জিয়াউর রহমানের আমলে ছিল? এরশাদের আমলে ছিল?
আরও পড়ুন : ডেঙ্গুতে ২ পুলিশ সদস্যের মৃত্যু
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের কথা চিন্তা করেন, খালেদা জিয়া যখন প্রথম সরকারে এলো, দক্ষিণাঞ্চলে কি কোনো সাংবাদিক যেতে পেরেছিল? কোনো সাংবাদিক যেতে পারেনি। সেখানে এতো অত্যাচার করেছিল, সাংবাদিক নিষিদ্ধ ছিল। তাদের অপকর্ম কোনো পত্রিকা লিখতেও পারতো না। যে লিখতো তাকে খেসারত দিতে হতো। তখন স্বাধীনতাটা কোথায় ছিল?
তিনি বলেন, যতটা স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকার দিয়েছে, গত ১৪ বছর সাংবাদিকরা যতটা স্বাধীনতা পেয়েছে, এ স্বাধীনতা কখনো কেউ ভোগ করেনি। সমালোচনা যেন দেশের কল্যাণে হয়, দেশের ক্ষতির জন্য না হয়। আমাদের দেশে কিছু বুদ্ধিজীবী আছে, যারা বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করে।
আরও পড়ুন : ৭ অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির আভাস
সাংবাদিকদের আবাসনের বিশেষ প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অনেককে প্লট দেওয়া হয়েছে। আবার অনেকে বিক্রিও করে দিয়েছে। সরকারিভাবে আমরা ফ্ল্যাট তৈরি করেছি। কিছু টাকা জমা দিয়ে, কোনোটা ১৬ বছর, কোনোটা ২৬ বছর ধীরে ধীরে টাকা জমা দিয়ে ফ্ল্যাটের মালিক হওয়া যায়।
আমরা সেভাবে অনেক ফ্ল্যাট তৈরি করেছি। সাংবাদিকরা চাইলে আমরা সেটা ব্যবস্থা করতে পারি। এ দেশে কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। আমি সাংবাদিকদের বলব, তারা যদি ফ্ল্যাট কিনতে চান, আমরা বিক্রি করব।
আরও পড়ুন : যেসব ঝুঁকিতে পড়তে পারেন নাগরিকরা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের আসলে তাদের চাকরির কোনো স্থায়িত্ব থাকে না। বয়স্ক বা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের কোনো সুযোগই থাকে না।
তিনি বলেন, সরকারি চাকরিতে অবসর ভাতা পাওয়া যায়। আমাদের রাজনীতিবিদদের জন্য কিছু থাকে না, সাংবাদিকদের জন্যও কিছু থাকে না, এটা বাস্তব। এখন গণভবনে আছি ভালো কথা, তারপর কোথায় উঠব?
আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় আহত ৯
আমি নিজের জন্য চিন্তা করি না, সবার জন্য ভাবি। আমি আপনাদেরকে (সাংবাদিক) বলব আপনারা কেউ ফ্ল্যাট কিনতে চাইলে কিস্তিতে দেব, সেভাবে আমরা ফ্ল্যাট তৈরি করে দিচ্ছি। যদি নিজেরাই ঘর করতে চান, তাহলে একটা জায়গা নির্দিষ্ট করে দেবো।
এ সময় অসুস্থ, অসচ্ছল সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের অনুকূলে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদসহ সাংবাদিক নেতারা।
সান নিউজ/এনজে
 
                                     
                                 
                                         
                     
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                         
                        
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                                 
                     
                             
                             
                     
                         
                                 
                                 
                                 
                                 
             
                     
                             
                             
                     
                            