নিজস্ব সংবাদদাতা: বাংলাদেশের সংবিধানের নতুন আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের জন্য গঠিত অনুসন্ধান বা সার্চ কমিটির প্রথম সভা আজ রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
সূত্র জানিয়েছে, রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকটি ডেকেছেন কমিটির সভাপতি বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
এর আগে মহামান্য রাষ্ট্রপতির নির্দেশ অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ শনিবার কমিটি গঠন করে আদেশ জারি করেছে। আইন অনুযায়ী কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পেশ করতে হবে।
নবগঠিত এ সার্চ কমিটির আহ্বায়ক পদে দায়িত্ব পাওয়া বিচারপতি ওবায়দুল হাসান (কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন) বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটিরও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সার্চ কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন যারা:
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান,
মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী,
সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন,
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং
কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলি সম্পন্ন করবে সার্চ কমিটি। এই কমিটির কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এই সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ৪ জন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দেবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি।
ইসি গঠনের আইনে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিটি শূন্যপদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে ২ জন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। ৩ জন সদস্যের উপস্থিতিতে সার্চ কমিটির সভার কোরাম গঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনের আইনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো সরকারই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। দীর্ঘদিন থেকে কমিশন গঠনে আইন করার দাবি জানিয়ে আসছিল রাজনৈতিক দলগুলো।
বিগত সময়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সরাসরি নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিতেন। গত দুই কমিশনও রাষ্ট্রপতি গঠন করেছেন সার্চ কমিটির মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ২০ ডিসেম্বর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির বৈঠকের মধ্য দিয়ে এবারের সংলাপ শুরু হয়। গত ১৭ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয় সংলাপ।
প্রায় প্রতিটি দলই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়। তবে বিএনপি সংলাপে অংশ নেয়নি।
আরও পড়ুন: মরক্কোর কূপে শিশু রায়ান, ফিরল নিথর হয়ে
পরে বহুল প্রতীক্ষিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ চূড়ান্ত করে সরকার। মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন, সংসদে পাস হওয়ার পর গত ২৯ জানুয়ারি আইনের গেজেট প্রকাশিত হয়। এই আইনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির বিধান রাখা হয়।
সান নিউজ/ এইচএন