ফারুক আহমাদ আরিফ: দেশকে পাকিস্তানী হানাদারদের থেকে মুক্ত করতে হাতে অস্ত্র তুলে নিলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরে নিজের ভাগ্য ফিরেনি বীরাঙ্গনা বানু (ভানু) বিবির। মুক্তিযোদ্ধাদের দেয়া সামান্য ভাতাতে ওষুধ কেনা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে রাস্তার মানুষের কাছে হাত পাচ্ছেন তিনি। সংসারে তিন ছেলের জীবনও কাটছে কষ্টে। সন্তানদের জীবনও চলছে নানান টানাপোড়েনের মধ্যে।
সার্টিফিকেটে নাম ভানু বিবি হলেও গণমাধ্যমে তাকে বানু বিবি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ২ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন তিনি। পেয়েছেন সরকারের কাছ থেকে সার্টিফিকেটও। সম্প্রতি তিনি কলাবাগান লেকে এসেছিলেন মানুষের কাছে চেয়ে-চিন্তে ওষুধের টাকা সংগ্রহ করতে। সেখানে সাক্ষাৎ হয় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আফরোজা সোমা নামের এক শিক্ষকের সাথে। তার ভিডিওর সূত্র ধরে বানু বিবির সাথে আলাপ করে জানা যায় তিনি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ। ওষুধ কিনতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তিনি মানুষের কাছ থেকে চেয়ে অর্থসংগ্রহ করছেন ওষুধ কিনতে।
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর প্রধান দায়িত্ব ছিলো পাকসেনাদের যাবতীয় গতিবিধি লক্ষ্য করে তাঁর কমান্ডারকে রিপোর্ট করা, এবং মুক্তিবাহিনীর অস্ত্র-গোলাবারুদ বহন করা। যুদ্ধ করেছেন তিনি গোসেরহাঁট, নাগেরপাড়া, তালতলাসহ সেক্টর ২ এর অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে।
কিন্তু একদিন অতর্কিতভাবেই হানা দেয় পাকসেনারা। গ্রামে ঢুঁকে তাণ্ডব চালাতে চালাতে ধরে ফেলে বানু বিবিকে। সারারাত ধরে চলে তাঁর ওপর পাশবিক নির্যাতন...।
এরপর একদিন শেষ হয় যুদ্ধ। স্বাধীন হয় দেশ। কিন্তু বানু বিবির সংগ্রামের জেন শেষ নেই। স্বাধীনতার পরপরই কে বা কারা মেরে ফেলে তাঁর স্বামীকে। শুরু হয় বানু বিবির আর এক নতুন যুদ্ধ...।
বানু বিবির ছেলে মো. ওয়াসিম সান নিউজকে জানান, তার মা বীরাঙ্গনা বাবু বিবির টিভি ও যক্ষ্মা রোগ ধরা পড়ে ১৯৯৮ সালে। তখন থেকে তার চিকিৎসা করানো হচ্ছে। এতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়ে গেছে। বর্তমানে তার পেটে পাথর বা আঁতে ঘাঁ হয়েছে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন তবে তেমন কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। চিকিৎসা বাবদ অনেক অর্থের প্রয়োজন। যে কেউ অর্থ দিয়ে তার চিকিৎসায় সহায়তা করতে এগিয়ে আসলে ভালো হয়।
ওয়াসিম একটি বেসরকারি কোম্পানিতে সামান্য বেতনে চাকরি করেন। তিনি জানান, তাদের পক্ষে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর। তাই দেশের বিবেকবান মানুষ তাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসুক। তা ছাড়া সরকার কোন ভালো উদ্যোগ নিলেও তারা খুশি হবেন বলে জানান ওয়াসিম।
বানু বিবির ঠিকানা: মিরপুর-১, ব্লক-এ, রোড নং-৮, গরীবে নেওয়াজ মসজিদের পাশে। সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা: বানু বিবি ০১৯২৬৭৪১৯৯৩ ও ওয়াসিম ০১৭৬০৩৩৫৮৭ বিকাশ।
সান নিউজ/এফএআর