২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ আগুনের পরের চিত্র। ছবি : সংগৃহীত
জাতীয়
অগ্নিঝুঁকিতে অবরুদ্ধ রাজধানী

ট্র্যাজেডির স্মৃতি মুছে আগুনের আতরে দিন কাটে নগরবাসীর!

সান নিউজ অনলাইন 

পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি অলিগলিতে এখনো ছড়িয়ে রয়েছে রাসায়নিকের গন্ধ, আর তার সঙ্গে লুকিয়ে রয়েছে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনা। নিমতলী ও চুড়িহাট্টার বিভীষিকার বছর পেরিয়ে গেলেও কেমিক্যাল গুদাম উচ্ছেদে কার্যকর কোনো অগ্রগতি নেই। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) হিসাব অনুযায়ী, এখনো পুরান ঢাকায় প্রায় দুই হাজার কেমিক্যাল কারখানা ও গুদাম চালু রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই বসতবাড়ি ও দোকানের আড়ালে চলছে। এসব স্থানে লাখো মানুষ অগ্নিঝুঁকি নিয়ে দিন কাটাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞ ও প্রশাসনিক সূত্র জানায়, রাজধানীতে বর্তমানে ২ হাজার ৬০০টি ভবন অগ্নিঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে ১ হাজার ১০৬টি বিপণিবিতান। যদিও আইনে অগ্নিনিরাপত্তার জন্য ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক, বাস্তবে বহু ভবন এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে না। ফলে প্রতিটি দুর্ঘটনার পর আশ্বাস মিললেও অবস্থার উন্নয়ন হয় না।

নিমতলীর পর আন্দোলন হয়েছিল, চুড়িহাট্টার পর গঠিত হয়েছিল টাস্কফোর্স-ডিএসসিসি মাত্র ৩৩ দিন অভিযান চালিয়ে ১৭০টি গুদাম সিলগালা করলেও পরে থেমে যায় কার্যক্রম। ব্যবসায়ীদের চাপে বা প্রশাসনিক উদাসীনতায় এই অভিযান আর গতি পায়নি। এখনও পুরান ঢাকার লালবাগ, চকবাজার, আরমানিটোলা, মিটফোর্ড, বাবুবাজারসহ নানা এলাকায় চোখে পড়ে রাসায়নিকের গুদাম। স্থানীয়দের দাবি, এসবের অনেকগুলোই সিটি করপোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্সপ্রাপ্ত, অর্থাৎ কর্তৃপক্ষ জানে, কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেয় না।

বেশ কয়েকটি গুদাম শিমপুরে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ থাকলেও তা গতি পায়নি। অধিকাংশ ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিয়েই পুরান ঢাকায় রয়ে গেছেন। ফায়ার সার্ভিস বলছে, তারা কেমিক্যাল ব্যবসার অনুমোদন দেয় না, বরং নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে ছাড়পত্র দেয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা গুদামের অস্তিত্ব গোপন করেন, ভিন্ন নামে ট্রেড লাইসেন্স নেন। অনেক ভবন নির্মাণের সময় অগ্নিনিরাপত্তার পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবে রূপায়িত হয় না।

রাজউক বলছে, অনুমোদিত ডিজাইনের বাইরে তৈরি ভবন সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য নেই। আর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শনও সীমিত। ফলে বাস্তবে ঢাকার বহু ভবনই অগ্নিনিরাপত্তাহীন। পরিকল্পনাবিদরা সতর্ক করছেন-পুরান ঢাকার ৭০ শতাংশ রাস্তাই ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়ি চলাচলের উপযোগী নয়। তাই সামান্য দুর্ঘটনাও বড় ট্র্যাজেডিতে রূপ নিতে পারে।

দুর্যোগ মোকাবিলায় আলাদা উইং, আইনের অস্তিত্ব কিংবা ভবনের অনুমোদনের পদ্ধতি থাকলেও বাস্তবতা হলো—ব্যবসায়ীদের প্রভাব, প্রশাসনের দুর্বলতা এবং জনসচেতনতার অভাবে রাজধানী আজও অগ্নিঝুঁকিতে বন্দি। শুধু কাগজে-কলমে নয়, বাস্তবায়নে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ ছাড়া ঢাকাবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। আর দেরি না করে পুরান ঢাকাকে ঝুঁকিমুক্ত করতে হবে এখনই।

সাননিউজ/এও

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কোরআন-সুন্নাহর শাসনই চূড়ান্ত লক্ষ্য: জামায়াত আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বল...

সচিবালয়ের পথে শিক্ষকরা, কর্মবিরতি গড়াল দ্বিতীয় দিনে

২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বেসরকারি এ...

মিডিয়ার হাতে গোপনীয়তা খুন!

জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া অভিযোগ করেছেন,...

স্বাধীনতার কোনো মূল্য হয় না; এটা অমূল্য

ইসরায়েলের কারাগারে বন্দিজীবন থেকে মুক্তি পাওয়া ফ...

বিচার ব্যবস্থায় নতুন যুগ, শুরু অনলাইন জামিননামা কার্যক্রম

হয়রানির অবসানে জামিন কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে প্রযুক...

শিক্ষকদের ঢল শহীদ মিনারে, শাহবাগ অবরোধের প্রস্তুতি

বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধিসহ শিক্ষ...

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে গভীর শঙ্কা বিএনপির

নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জাম...

ট্র্যাজেডির স্মৃতি মুছে আগুনের আতরে দিন কাটে নগরবাসীর!

পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি অলিগলিতে এখনো ছড়িয়ে রয়েছে রাসায়...

৩৫ বছর পর চবিতে নির্বাচনী সকাল, চলছে ভোটগ্রহণ 

দীর্ঘ ৩৫ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে চট্টগ্রাম বি...

মিরপুরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬

ঢাকার মিরপুরের রূপনগর এলাকার শিয়ালবাড়িতে অবস্থিত &...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা