ছবি: সংগৃহীত
লাইফস্টাইল

ডেঙ্গুতে অন্তঃসত্ত্বাদের করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক: রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। এতে আক্রান্ত হচ্ছেন সকল বয়সের মানুষ। ডেঙ্গু নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও।

আরও পড়ুন: ভাইরাস জ্বর ভেবে ডেঙ্গুকে অবহেলা নয়

এরই মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ অন্তঃসত্ত্বা নারী। তাই অন্তঃসত্ত্বা নারীদের আতংক বেড়েই চলেছে।

তবে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞরা অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সালমা রউফ বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হওয়ার পর ২-৩ জন অন্তঃসত্ত্বা নারী এসেছিলেন, যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। তাদের অবস্থা ভালো ছিল। তবে বর্তমানে কোনো অন্তঃসত্ত্বা ডেঙ্গু রোগী নেই।

আরও পড়ুন: কিশোরীদের গর্ভধারণ ঝুঁকিপূর্ণ কেন?

এমন ক্ষেত্রে রোগীকে সবসময় মশারি ব্যবহার করতে হবে এবং বেশি সাবধান থাকতে হবে। বহির্বিভাগ ও গাইনি ওয়ার্ডে আসা রোগীদের আগে রক্ত পরীক্ষা করতে বলছি। যদি ডেঙ্গু ধরা পড়ে, তাহলে খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চা নড়াচড়া করছে কিনা।

ওষুধ খাওয়া ও ইঞ্জেকশন দেওয়ার ব্যাপারে সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখতে হবে। আর খুব বেশি অসুস্থ হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।

আরও পড়ুন: প্লাটিলেট বাড়াতে যা খাবেন

ডেঙ্গু নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ব্যাপারে কিছুটা শঙ্কা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সহযোগী অধ্যাপক ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. রেজাউল করিম কাজল বলেন, বাচ্চা পেটে থাকা অবস্থায় যদি কারো ডেঙ্গু হয়, তবে তা ভয়ের বিষয়। সে সময় অন্তঃসত্ত্বা নারীর শরীরে তরলের মাত্রা কমে যায়।

এতে মায়ের পাশাপাশি পেটের সন্তানের শরীরের রক্ত চলাচল কমে যেতে পারে। প্রসবকালীন সময়ে বা শেষ ৩ মাসের দিকে মায়ের ডেঙ্গু হওয়াটা বেশি ভয়ের। এ সময় ডেঙ্গু আক্রান্ত মায়ের নবজাতকের মৃত্যুও হতে পারে।

আরও পড়ুন: মশাবাহিত ৭ রোগ থেকে সাবধান

সবচেয়ে কঠিন অবস্থা হবে, যদি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্লাটিলেট কমে যাওয়া প্রেগন্যান্ট রোগী অপারেশন বা ডেলিভারি করাতে হয়। এসব রোগীকে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়া ও কঠিন। আমরা আছি মহাবিপদে। তবে আশার কথা হলো, ডেঙ্গু আক্রান্ত এমন কোনো রোগী আমরা পাইনি।

আমাদের পরামর্শ নিতে আসা অন্তঃসত্ত্বাদের আমরা তাদের চারপাশটা পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখতে বলছি। সেই সাথে হাত-পা ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে। কারণ পায়েই মশা বেশি কামড় দেয়। এছাড়া মশার কয়েলের ধোঁয়া থেকে দূরে থাকার কথা বলা হয়েছে এবং যেকোনো ধরণের কীটনাশক ও স্প্রে ঘর বা অফিসে অ্যারোসোল দেওয়ার ২০ মিনিট পর সেই স্থানে যেতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: শরীর ঠান্ডা রাখবে যে সবজি

স্বাস্থ্য অধিদফতরে কর্মরত গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন বলেন, ডেঙ্গুতে এতো বেশি আতঙ্কিত না হয়ে বরং আমরা সচেতন হই। কারণ ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রোগীর ক্ষেত্রে এ জ্বরে মৃত্যুর হার খুবই কম, ১০০ তে একজন। কিন্তু পরের ৩ মাসের অন্তঃসত্বা রোগীর ক্ষেত্রে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরণের ভাইরাসে মৃত্যুর হার ১০০/২০ জন। তাই সতর্কতা ও সচেতন দরকার।

তিনি আরও বলেন, অন্তঃসত্ত্বা নারীদের উচিত জ্বর হলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রক্তের সিবিসি করানো। ডেঙ্গু জ্বরে নাপা-প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না। প্লাটিলেট কমে এলেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। এছাড়া জ্বরের শুরুতে ১ ও ৪ দিন পর দুই দফায় ডেঙ্গু টেস্ট করাতে হবে।

আরও পড়ুন: বর্ষায় সর্দি-কাশি দূর করতে ৫ পানীয়

ডেঙ্গু জ্বরের ওয়ার্নিং কিছু সাইন আছে, সেগুলো অবশ্যই মানতে হবে। যেমন প্রসাব কমে যাওয়া, পেট ব্যাথা, অতিরিক্ত বমি, শরীরের চামড়ায় ও মুখে র‍্যাশ বা মেস্তা জাতীয় লাল ছোপ হতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। জ্বর কমে যাওয়াটা সবচেয়ে ভয়ের। সেই সময়টা চিকিৎসকের পরামর্শে থাকতে হবে।

ডেঙ্গু আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীদের করণীয়:

(১) জ্বর আসলে রক্ত পরীক্ষা করতে হবে।

(২) খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চা নড়াচড়া করছে কি না।

(৩) হাত-পা ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে।

(৪) মশার কয়েল ধোঁয়া থেকে রোগীকে দূরে রাখুন।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গুর লক্ষণ ও আক্রান্ত হলে করণীয়

(৫) বিভিন্ন স্থানে অ্যারোসোল বা কীটনাশক জাতীয় স্প্রে করলে কমপক্ষে ২০ মিনিট পরে সেই স্থানে যাবেন।

(৬) ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই রক্তের সিবিসি করতে হবে।

(৭) রক্তে প্লাটিলেট কমে এলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

(৮) জ্বরের শুরুতে ১ ও ৪ দিন পর দুই দফায় ডেঙ্গু পরীক্ষা করান।

আরও পড়ুন: বর্ষাকালে ‘ভিটামিন ডি’ পাওয়ার উপায়

(৯) প্রসাব কমে যাওয়া, দুর্বল লাগা, পেট ব্যাথা, অতিরিক্ত বমি, শরীরের চামড়ায় বা মুখে র‍্যাশ বা মেস্তা জাতীয় লাল ছোপ হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।

(১০) অন্তঃসত্ত্বা ডেঙ্গুর সবচেয়ে বড় ভয় ব্লিডিং। এ সময় ডেলিভারিতে, নরমাল ও সিজার যে কোনো ক্ষেত্রেই বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে।

(১১) রোগী যদি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জন্য একাধিক ব্লাড ডোনার রেডি রাখতে হবে।

আরও পড়ুন: খাওয়ার পরপরই চা খেলে কী ঘটে?

(১২) ডেলিভারির পরপরই নবজাতককে শিশু বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে পরামর্শ নিতে হবে।

(১৩) ডেলিভারির পর প্রচুর রক্তপাত হতে পারে। তাই খুব বাধ্য না হলে অন্তঃসত্ত্বা ডেঙ্গু রোগীকে কোনভাবেই অপারেশন বা ব্যাথার ওষুধ দিয়ে ডেলিভারি করানো যাবে না।

সান নিউজ/এমএ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলা বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস পালিত

ভোলা প্রতিনিধি: বর্ণাঢ্য আয়োজনে ভ...

সৌদি গেলেন ৪১৩ জন হজযাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছর পবিত্র হজের প্রথম ফ্লাইটের আনুষ্...

মে মাসে ৮ দিনেই বজ্রপাতে ৪৩ মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি মে মাসের গত ৮ দিনে সারা দেশে বজ্রপাতে...

গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে সমাবেশ 

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: গাজায় গণহত্য...

ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার আশ্বাস ভারতের

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছর ১৬ লাখ ব...

মে মাসে ৮ দিনেই বজ্রপাতে ৪৩ মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি মে মাসের গত ৮ দিনে সারা দেশে বজ্রপাতে...

ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ কাল, মানতে হবে শর্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির চেয়ারপ...

৪৬তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৪৬তম বিসিএসের প...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা