আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ককেশাস অঞ্চলের দেশ আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে সেনা হামলায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২ জন বেসামরিক নাগরিক বলে দাবি করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কানাডা-ভারত পাল্টা পাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কার
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আজারবাইজানের সৈন্যদের চালানো ঐ হামলায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী আর্মেনিয়ান মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তা গেঘাম স্টেপানিয়ান জানান, মঙ্গলবার আজারবাইজানীয় সামরিক হামলায় সেখানে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ফের যুক্তরাষ্ট্রে জেলেনস্কি
টুইটার নামে পরিচিত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, আজারবাইজানের চালানো এ হামলায় ২৯ জন বেসামরিক নাগরিকসহ কমপক্ষে ১৩৮ জন আহত হয়েছেন। যদিও তার এ দাবি রয়টার্স যাচাই করতে পারেনি।
মূলত আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃত জাতিগত আর্মেনীয় ছিটমহল নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলকে ঘিরে গত কয়েক মাস ধরে ২ দেশের মাঝে উত্তেজনা চলছে। সম্প্রতি বিতর্কিত ঐ ভূখণ্ডে মাইন বিস্ফোরণসহ অন্য এক ঘটনায় আজারবাইজানের ১১ পুলিশ ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
আরও পড়ুন: পেরুতে বাস খাদে পড়ে নিহত ২৪
মঙ্গলবার আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ঐ অঞ্চলে আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীর অভিযান চালানোর খবর পাওয়া যায়।
গত কয়েক দশক ধরে বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান বিবাদে লিপ্ত রয়েছে। অঞ্চলটি আজারবাইজানের ভূখণ্ডের ভেতরে অবস্থিত হলেও ১৯৯৪ সালে এক যুদ্ধের পর থেকে আর্মেনিয়ার সমর্থনে জাতিগত আর্মেনীয় বাহিনী নাগোরনো-কারাবাখ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
ইতিমধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে কমপক্ষে দুই বার যুদ্ধে জড়িয়েছে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর প্রথমবার যুদ্ধে জড়ায় এই দুই দেশ।
আরও পড়ুন: কঙ্গোয় ভূমিধসে ১৭ প্রাণহানি
২০২০ সালে সাবেক সোভিয়েত এই দুই রাষ্ট্র বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আবারও প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। দুই দেশের সৈন্যদের হামলা ও পাল্টা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয়পক্ষের সাড়ে ৬০০০-এর বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া ঐ যুদ্ধের পর নাগোরনো-কারাবাখে কয়েক হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে। পরে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেখান থেকে শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বাস-লরির সংঘর্ষে ২০ শ্রমিক নিহত
২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে লাচিন করিডোর নামে পরিচিত নাগোরনো-কারাবাখ ছিটমহলে প্রবেশের একমাত্র পথ অবরোধ করে রেখেছে আজারবাইজান।
অবশ্য আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, অভিযানে বেসামরিক নাগরিক বা বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে না। কেবল উচ্চ নির্ভুল নিশানার অস্ত্র ব্যবহার করে বৈধ সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে।
সান নিউজ/এনজে