আন্তর্জাতিক

করোনার পর ছত্রাকে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে ৫৭ শতাংশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পর ভারতের জন্য রোগীদের শরীরে ছত্রাক সংক্রমণের মতো দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ রোধ করাই এখন অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এমনই দাবি করেছে দেশটির ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর)।

গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের পর দ্বিতীয় সংক্রমণ হিসেবে মিউকরমাইকোসিস বা কালো ছত্রাকে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশের মৃ্ত্যু হয়েছে।

এছাড়া, করোনা রোগীদের চিকিৎসার সময়ে যথেচ্ছ ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ব্যবহার রোগীদের শরীরে ‘ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স’ বা ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণু তৈরি করছে। যা পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় বার ইনফেকশনের জন্য দায়ী।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, আরও স্পষ্ট করে বললে হাসপাতালে যাদের অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে, কিংবা স্টেরয়েডের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হচ্ছে, তারা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকজনিত সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন।

আবার ছত্রাকে সংক্রমণের পর ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না হলে সংক্রমিতদের বড় অংশের মৃত্যু হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ভারতের ১০টি হাসপাতালে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার রোগীর ওপরে গবেষণা চালায় আইসিএমআর। গবেষণায় দেখা গেছে, ওই রোগীদের প্রায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মতো কোনো না কোনো ছত্রাকের বা ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের শিকার হয়েছেন।

সবচেয়ে আশঙ্কার কথা হচ্ছে- অর্ধেকরও বেশি করোনা রোগী যারা দ্বিতীয় সংক্রমণ হিসেবে ছত্রাকঘটিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মৃত্যু হয়েছে।

ওই গবেষণার দায়িত্বে থাকা আইসিএমআর’র বিজ্ঞানী কামিনী ওয়ালিয়ার মতে, শতাংশের হিসেবে সংখ্যাটি কম মনে হলেও, গোটা ভারতের প্রেক্ষিতে দেখলে দেশে প্রায় এক লাখ রোগী ছত্রাক সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশকে বাঁচানো যায়নি।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন গত এপ্রিল মাসে দাবি করেছিলেন, দেশে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ১১ শতাংশ। অন্যদিকে বিশ্বে করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর হার ১০ শতাংশ। সেখানে ছত্রাক সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহারের পরিসংখ্যান দেখে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তাই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া করোনা রোগীদের ছত্রাক সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচানোকেই এখন মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে আইসিএমআর। মূলত করোনা সংক্রমিত হয়ে আইসিইউতে ভর্তি, অক্সিজেনের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন এমন রোগীরাই দশ দিনের মাথায় ওই ছত্রাকজনিত সংক্রমণের শিকার হয়ে থাকেন।

গবেষণা বলছে, সংক্রমিত ব্যক্তিদের শরীর সাধারণ ওষুধে সাড়া না দেওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি বিপুল সংখ্যক রোগীকে সুস্থ করতে কড়া অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এছাড়া ছত্রাক সংক্রমিত ৫২ শতাংশকে রোগীকে সুস্থ করার জন্য এমন অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হচ্ছে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ‘পর্যবেক্ষণের’ তালিকায় রয়েছে।

চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মানবদেহের উপকারি ব্যাকটেরিয়াগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বিভিন্ন রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে সক্ষম হয়। তাই ছত্রাক সংক্রমণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেওয়া স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ যথা সম্ভব কম ব্যবহার করা উচিত।

গবেষকদের মতে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে এসব অ্যন্টিবায়েটিক প্রয়োজনীয় হলেও, অনেক ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় ও যথেচ্ছ ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধের ব্যবহার শরীরে মিউকরমাইকোসিসের মতো ছত্রাক সংক্রমণকে ডেকে আনছে।

সাননিউজ/এএসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভূঞাপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় 

খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল: প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট। নেই...

শহীদ শেখ জামাল’র জন্ম

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অত...

রাতের আঁধারে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):

লক্ষ্মীপুরে চলছে ৫ ইউনিয়নে ভোট

সোলাইমান ইসলাম নিশান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি...

মুন্সীগঞ্জে সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন

মো. নাজির হোসেন, মুন্সিগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ভূমি অফি...

ডেঙ্গুতে বিশ্বে ৪০ হাজার মৃত্যুর আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ডেঙ্গু রোগে...

গোটা দেশকে বন্দিশালা বানানো হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির অঙ্গ ও...

নারী আম্পায়ারের সমালোচনায় সুজন

স্পোর্টস ডেস্ক: চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ড...

যুক্তরাষ্ট্রে টর্নেডোর আঘাত, নিহত ৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যে টর্নেড...

বাস-মাইক্রো সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৪

জেলা প্রতিনিধি: কক্সবাজারের ঈদগাঁওয়ে যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্র...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা