মো. রাশেদুজ্জামান রাশেদ, পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের বোদা পৌর সদরে এক নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সাতখামার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
গত ১৪ নভেম্বর পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ভুক্তভোগী সুমি আক্তার নামের ওই নারী। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আটোয়ারী থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার আসামি সাতখামার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আনিছুর রহমান বোদা পৌর সদরের সাতখামার এলাকার মৃত নাজিম উদ্দীনের ছেলে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী সুমি আক্তার (২৫) সাতখামার মাস্টারপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া। গত ৭ মাস ধরে তিনি আবু সায়েম সবুজের বাড়ির একটি অংশ ভাড়া নিয়ে থাকতেন।
আরও পড়ুন: বৃদ্ধাকে হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, শিক্ষক আনিছুর রহমান প্রায় সময় তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করতেন এবং অবৈধ সম্পক গড়ার জন্য দীর্ঘদিন যাবত মুঠোফোনে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।
অভিযুক্ত আনিছুর আরও কয়েকজনের সহায়তায় রাতে ভুক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ১০ নভেম্বর ভুক্তভোগীকে রাস্তায় একা পেয়ে আনিছুর রহমান তার নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে কয়েকজন এগিয়ে এলে তিনি ভুক্তভোগী সুমিকে ছেড়ে দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী সুমি জানান, শিক্ষক আনিছুর রহমান দীর্ঘদিন যাবত আমাকে কুপ্রস্তাবসহ আমার সাথে অবৈধ সম্পর্ক করার প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। আমি প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় আমাকে রাস্তা থেকে টেনেহিঁচড়ে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
আরও পড়ুন: আদালত চত্বরে ককটেল বিস্ফোরণ
আমার চিৎকারে লোকজন জড়ো হলে আমাকে ছেড়ে দিয়ে আনিছুর রহমান চলে যায়। এখনো আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে, আমাকে একা পেলে ভুক্তভোগী ধর্ষণ করা হবে। আমি ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য পঞ্চগড় আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
এ ব্যাপারে বাড়ীর মালিক আবু সায়েম সবুজ জানান, আনিছুর রহমান আমার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন।
আমি এ বিষয়ে তার সাথে কথা বলতে গেলে আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। আমার বিরুদ্ধে আনীত তার মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা। উল্টো সে আমার
স্ত্রীকে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন।
আরও পড়ুন: তুচ্ছ কারণে নারীকে পিটিয়ে হত্যা
স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক আনিছুর রহমানের চারিত্রিক সমস্যা রয়েছে। শিক্ষিকাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। বিভিন্ন নারীকে যৌন নির্যাতনসহ অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকায় স্থানীয় বিদ্যালয়ে সকলের উপস্থিতিতে তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন।
এরপরও বিভিন্ন নারীকে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের কুপ্রস্তাব দেওয়ায় জন্য আপোষ মিমাংশা করা হয়। তিনি দিনদিন আরও বেপোরোয়া উঠে উঠছেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজাহান সিরাজ জানান, ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার নারীকে কুপ্রস্তাব ও অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে শালিস করা হয়েছে এবং তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন। সুমিকে নির্যাতনের বিষয়টি আমি অবগত আছি।
আরও পড়ুন: লঘুচাপ আরও শক্তিশালী হতে পারে
সাতখামার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জানান, শিক্ষক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলার বিষয়ে জানতে পেরেছি। তিনি বর্তমানে হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছেন।
এদিকে শিক্ষক আনিছুর রহমান জানান, আমার বাড়িতে তারা হামলা করেছে। হামলা থেকে বাঁচার জন্য তারা মিথ্যা মামলা করেছে।
সান নিউজ/এনজে