খোরশেদ আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীর গলায় ছুরি ঠেকিয়ে ২০ হাজার টাকা ছিনতাই ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: সাকিবের সঙ্গে প্রেম করছেন ববি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের বিষয়টি জানালে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে সে অবস্থা হবে বলে হুমকিও দেয়া হয়েছে তাকে।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত মতিহার হলে ভাস্কর সাহার রুমে (২৩২ নম্বর) এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় রাত ৮ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর অনুসারী।
আরও পড়ুন: প্রিয়াঙ্কা যখন বিশ্বসুন্দরী, নিক তখন শিশু
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সামছুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ও মতিহার হলের ১৫৯ নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগে সামছুল জানান, তিনি হলে তার রুমে মোবাইল সার্ভিসিং করে জীবিকা নির্বাহ করেন ও পরিবারকে সহযোগিতা করেন। গত ১৫ আগস্ট প্রথম তাকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলে। দেখা করলে ভাস্কর চাঁদা দাবি করে। এরপর নিয়মিত ফোন দিয়ে মানসিকভাবে টর্চার করে। আজ বিকেল ৩টার দিকে ভুক্তভোগীকে ভাস্কর রুমে ডেকে নিয়ে যায় এবং গলায় ছুরি ধরে কাছে থাকা আনুমানিক ২০ হাজার টাকার নিয়ে নেয়। সাথে আরো ৬ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাতে চাইলে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এই বিষয়টি কাউকে জানালে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে সেই অবস্থা হবে বলে হুমকি দিয়েছে। এছাড়াও আজ রাত ১১টার মধ্যে ছয় হাজার না দিলে হল থেকে বের করে দেবে।
আরও পড়ুন: বেড়েছে মৃত্যু, কমেছে শনাক্ত
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, ভাস্কর তার রুমে ডেকে নিয়ে বলে, তুই হলের মধ্যে মোবাইল সার্ভিসিং করিস। চা খাওয়ার জন্য টাকা দেয়া লাগবে। টাকা দেয়ার সামর্থ নেই বলে আমি জানাই। তখন গলাই ছুরি ধরে কাছে থাকা ২০ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে। বিষয়টি প্রশাসন ও সাংবাদিকদের জানাতে চাইলে আমাকে রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে মারধর করে। আর বলে, আবরারকে দেখেছিস সেই অবস্থা কিন্তু তোরও হবে।
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা বলেন, ওর সাথে আমার সেরকম কোনো সম্পর্কই নেই। আমরা একই সেশনের বন্ধু। সামছুলই আমাকে বলেছিল মোবাইল সার্ভিসিং করছি কোনো সমস্যা হলে বলিস ফ্রীতে করে দেব। গত কয়েকদিন আগে আমার দুই ছোটভাই এসেছিল মোবাইল সার্ভিসিং করার জন্য। তাই সামছুলকে আমি ফোন দিয়েছিলাম। সামছুল বলতে পারে ফোন দিয়েছি এরকম কিছু। কিন্তু মারধরের তো কোনো কথাই আসে না।
আরও পড়ুন: ইউরোপে ফের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেছে তা শুনিনি। তবে যদি ঘটে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। মারধরের আলামতও পেয়েছি। যদি তার সাথে এরকম কিছু হয়ে থাকে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিনেন্সে অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থী বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/কেএমএল