নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বুলিং’ থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে বিদ্যালয়ে বুলিং রোধে নীতিমালা বা গাইডলাইন তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চেয়েছেন রুলে।
বুলিং: (বুলিং হলো এক ধরনের মৌখিক, মানসিক বা শরীরিক পীড়ন। ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে কোন একজনকে বারবার বিভিন্নভাবে ভয় দেখানো বা আক্রমণ করাই বুলিং। হতে পারে বিভিন্ন নামে ব্যাঙ্গ করা, বদনাম করা, লাথি মারা, বিভিন্ন ধরনের কুরুচিপূর্ণ অঙ্গভঙ্গি করা বা উত্ত্যক্ত করা। এমনকি অবহেলা বা এড়িয়ে চলে মানসিক চাপ দেয়াটাও এক ধরনের বুলিং। এক্ষেত্রে দুর্বল কাউকেই বেছে নেয় বুলিংকারী। স্কুল-কলেজ সহপাঠীদের মধ্যে এই বুলিং বিষয়টি ঘটে থাকে।)
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রোববার (২২ আগস্ট) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুলসহ আদেশ দেন।
‘মোটা বলে সহপাঠী ও শিক্ষকের লাঞ্ছনার শিকার মৃত কিশোরের পরিবার যা বলছে’ শিরোনামে ৮ জুলাই বিবিসি বাংলায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনটি যুক্ত করে এ বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ ১৬ আগস্ট একটি রিট করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে তানভীর আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভাষ্য, ঢাকায় অ্যানোরেক্সিয়া ও বুলিমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক কিশোরের মৃত্যুর পর তার পরিবার অভিযোগ করেছে যে স্কুলের সহপাঠী ও শিক্ষকদের বুলিংয়ের শিকার হওয়ার ফলস্বরূপ এ ঘটনা ঘটেছে।
কিশোরের বাবা মো. ফজলুল করিম বলেছেন, তাঁর ছেলের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ার কারণে স্কুলে তাকে প্রায় নিয়মিতই বুলিং ও উপহাসের শিকার হতে হতো। পরিবার চায়, স্কুলে বুলিং বন্ধ করার জন্য যেন সরকার ব্যবস্থা নেয়।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখার শিক্ষার্থী ছিল ছেলেটি। সেখানকার কর্তৃপক্ষ বলছে, বুলিংয়ের কোনো অভিযোগ সম্পর্কে তারা অবগত নয়।
আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বনশ্রী শাখার দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী অ্যানোরেক্সিয়া ও বুলিমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ঘটনা তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতি এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিক্ষাসচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সান নিউজ/এফএআর