নিজস্ব প্রতিবেদক: রংপুরে সাড়ে তিন কোটি টাকা দামের 'জাগুয়ার এক্স' মডেলের একটি পরিত্যক্ত গাড়ি উদ্ধার হয়েছে। গেলো ৪৮ ঘণ্টায় ওই গাড়ির প্রকৃত মালিকের হদিস মিলেনি। তবে গাড়ির মালিককে খুঁজতে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন গাড়ি উদ্ধারের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বুধবার (১৩ অক্টোবর) রাতে নগরীর ধাপ এলাকার পপুলার ডায়াগনস্টিকের মালিক ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়ি থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। তবে মোস্তাফিজুর রহমান ওই গাড়িটির মালিকানা অস্বীকার করেছেন। গাড়িটির বিষয়ে বিআরটিএর মাধ্যমে তথ্য নেওয়া হবে। প্রকৃত মালিককে খুঁজতে মাঠে কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারদলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত একই এলাকার আরেক চিকিৎসক লুৎফে আলী রনিকেও গাড়িটির মালিকানা নিয়ে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে তিনি ওই গাড়ির মালিক নন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।
ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ অভিযোগ তোলা হয়েছে বলে দাবি করে চিকিৎসক লুৎফে আলী রনি বলেন, পপুলারের মালিকের কাছে আমি জমির টাকা পাই। ওনি (মোস্তাফিজুর রহমান) আমার জমি দখল করে রেখেছেন। এখন ওনার সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে আমার জমি রয়েছে। পপুলার ডায়াগনস্টিকের মালিকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কিন্তু টাকা দিতে ১৩ দিন ধরে বসিয়ে রেখেছে। তবে ওই গাড়ি সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।
পুলিশ জানায়, পপুলার ডায়াগনস্টিকের মালিক চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমানের বাড়িটি লুৎফে আলী রনি দখলে রেখেছেন, এমন অভিযোগ পেয়ে সেখানে তদন্তে যান তারা। এ সময় বাড়ির গ্যারেজে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই গাড়িটি দেখতে পেয়ে মালিকের নাম জানতে চায়। তবে রনি গাড়িটির মালিকানা অস্বীকার করেন। সাড়ে ৩ কোটি টাকা দামের 'জাগুয়ার এক্স' মডেলের স্পোর্টস কারটির নম্বর চট্রো মেট্রো ভ-১১-০০৩৯। এটি উদ্ধারের পর থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
স্থানীয়রা ঘটনাটিকে রহস্যজনক বলছেন। তাদের দাবি, পপুলার ডায়াগনস্টিকের মালিকের ভবনের পাশের একটি টিনের ঘরে গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে ছিলো। সেখানে সাধারণের প্রবেশাধিকার নিষেধ ছিলো। নির্দিষ্ট কিছু লোকজন সেখানে যাতায়াত করত। এ কারণে প্রকৃত মালিক কে, তা এলাকার কেউ জানে না।
মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রুবেল এন্টারপ্রাইজ নামে চট্টগ্রামের এক ব্যক্তি গাড়টির মালিক। কিন্তু রংপুরে গাড়িটি কীভাবে এল, তা কেউ বলতে পারছে না। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
তিনি আরও জানান, উদ্ধার হওয়া গাড়িটির প্রকৃত মালিক এখন খুঁজে না পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় চোরাই পণ্য কেনাবেচা-সংক্রান্ত একটি মামলা হয়েছে। এতে ডা. লুৎফে আলী রনিসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। পুরো ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সান নিউজ/এফএআর