কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর): ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় আশরাফুজ্জামান জিল্লু নামে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। জিল্লু আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও আড়পাড়া গ্রামের জিন্নাত আলী মিয়ার ছেলে।
আরও পড়ুন: আত্মঘাতী হামলায় ৪ সেনা নিহত
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বানা ইউনিয়নের শিরগ্রাম গোরস্থান সংলগ্ন এলাকায় প্রায় দুই বছর পূর্বে আনুমানিক তিন একর জায়গা লিজ নিয়ে একটি সুতার মিল প্রতিষ্ঠা করেন শিরগ্রামের হেলাল খান। এক বছর কয়েকমাস যাবৎ এ মিলটি জিল্লুর নিকট বিক্রয়ের কথা বলে কয়েক দফায় জিল্লুর নিকট থেকে ৪২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন হেলাল খান।
জিল্লু ছাড়াও হেলাল বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে প্রায় এক বছর আগে মিলটি বন্ধ করে গা ঢাকা দেন। এদিকে জিল্লু মিলটির মালিকানা বুঝে পেতে অথবা টাকা ফেরত পেতে মরিয়া হয়ে হেলালকে খুঁজতে থাকেন। জানতে পারেন হেলাল তার মিলটি বিক্রি করে বিদেশে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
আরও পড়ুন: সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে
এর মধ্যে গত ১৮ জুলাই রাতে ঢাকায় হেলাল খানের বাসায় হেলালের সাথে জিল্লুর সাক্ষাৎ হলে টাকা দেওয়ার কথা বলে ঢাকা থেকে জিল্লুর সাথে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন হেলাল খান। বিভিন্ন পাওনাদাররা টাকার জন্যে চাপ দিতে পারেন- এই আশংকায় হেলাল জিল্লুর গ্রামের বাড়ি অবস্থান করেন। এরই মধ্যে টাকা ফেরত না দেওয়ার কৌশল হিসেবে হেলাল খান তার ভাই মো. বেলায়েত খান বিল্লালের মাধ্যমে স্ত্রীকে দিয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় অপহরণের মিথ্যা মামলা করেন।
এ বিষয়ে পাশ্ববর্তী বড়গাঁ গ্রামের মিজানুর রহমান (৫০) বলেন, হেলাল খান বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে মিলটি বিক্রয়ের কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রায় বছর খানেক ধরে উধাও।
আরও পড়ুন: সরি প্রেমকান্ত, দেশে ফিরে যাও
জয়দেবপুর গ্রামের পাখি খান বলেন, সুতার মিলটি স্থাপনের কয়েকমাস পরেই মিলটি বন্ধ করে দিয়ে মিলের যন্ত্রাংশ বিক্রি করে দিয়ে উধাও হয়ে যান হেলাল খান।
দক্ষিণ শিরগ্রামের শিহাবুল ইসলাম জানান, হেলাল খান মিলটি বিক্রয় এবং মিলের শেয়ার দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন সময় তাকে খুঁজতে লোক আসতো। কিন্তু প্রায় এক বছর যাবত সে নিখোঁজ।
এ বিষয়ে হেলাল খানের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মামলার এজাহারে যেটা উল্লেখ আছে সেটাই আমার বক্তব্য। এর বাইরে আমার কোন কথা নেই।
আরও পড়ুন: কৃষ্ণাঙ্গ হত্যায় ৩ শ্বেতাঙ্গের যাবজ্জীবন
জিল্লুর ছোট ভাই মো. নাজমুল মিয়া (৩৮) জানান, এক বছরের অধিক সময় হেলাল খান আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ৪২ লাখ টাকা নেয় সুতার মিল বিক্রি করার কথা বলে। কিন্তু মিলও লিখে দেয় নাই, টাকাও ফেরত দেয় না। এখন সে মিলটি গোপনে বিক্রি করে বিদেশ যাওয়ার পাঁয়তারা করছে। এই সংবাদ পেয়ে হেলাল খানের ঢাকাস্থ বাসায় যোগাযোগ করলে তিনি জিল্লু ভাইয়ের সাথে আমাদের বাড়িতে আসেন। দেনার কারণে বিভিন্ন লোকজনের আক্রোশ থেকে বাঁচার জন্য নিজেই স্বেচ্ছায় আমাদের বাড়িতে অবস্থান করেন। পরে টাকা না দেওয়ার জন্য ভাইয়ের (জিল্লু) বিরুদ্ধে অপহরণের নাটক সাজান।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইন চার্জ মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, হেলাল খানের নিকট জিল্লু টাকা পাবে, এমনটি লোকমুখে শুনেছি। কিন্তু আমার নিকট জিল্লু এ বিষয়ে কিছু বলেননি কিংবা কোন ডকুমেন্টও দেননি।
সান নিউজ/কেএমএল