নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুসের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। শনিবার (১০ জুলাই) দুপুরে রূপগঞ্জ থানায় ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. নাজিম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এতে সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান-এমডিসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম।
এদিকে ৫২ জন শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করলেও একটিবারের জন্যও আসেননি সজীব গ্রুপের মালিক এমএ হাসেম। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কর্ণগোপ এলাকার হাসেম ফুড লিমিটেডের ছয়তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দুদিন পার হলেও তার দেখা বা বক্তব্য পাননি গণমাধ্যমকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার পর রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডস-এর ‘সেজান জুস’ কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ১১০ জন সদস্য আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন।
শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপরই শুরু হয় মরদেহ উদ্ধারের কাজ। আগুনের ঘটনায় ৫২ জন নিহত হয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অধিকাংশ মরদেহই কারখানার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থেকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।
কারখানার শ্রমিক ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, কারখানাটি তিন শিফটে পরিচালিত হতো। সেখানে কাজ করেন দুই হাজারের বেশি শ্রমিক। কারখানাটিতে সেজান জুসের কর্ক ও লেভেল প্যাকেটিংয়ের কাজ করা হতো। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত ঘটে নিচ তলায়।
ভবনটির ছাদ থেকে ২৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। তবে জীবন বাঁচাতে গিয়ে অনেক শ্রমিক ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আহত হন। নিহতও হন কয়েকজন, যাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করা হয়।
ইতোমধ্যে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান এবং দায়ীদের খুঁজে বের করতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস এবং শ্রম অধিদফতরের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সাননিউজ/এমএইচ