সারাদেশ

বিজয় দিবসকে ঘিরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ফুলের ব্যবসা

নিজস্ব প্রতিনিধি, যশোর : ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালিতে বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসকে ঘিরে ফুলের ব্যবসা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরলেও চাষিদের মধ্যে আবারও করোনার আতঙ্ক।

বিভিন্ন দিবসের দিকে চেয়ে থাকেন এখানকার ফুল চাষিরা। কিন্তু ভাইরাসের প্রভাবে গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে কোন ব্যবসা করতে পারেনি তারা। তার ওপর এসে আঘাত করে ঘূণিঝড় আম্পান। তখন চরমভাবে ভেঙে পড়ে ফুল চাষের ওপর র্নির্ভর এলাকার হাজার-হাজার মানুষ। বিক্রি না হওয়ায় গরু-ছাগল দিয়ে অনেকে ক্ষেতের ফুল খাইয়েছে।

দেশের মধ্যে বাণ্যিজিকভাবে যশোর জেলার গদখালীতে ফুল উৎপাদন শুরু করা হয় আশির দশকে। দেশে ফুলের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার রয়েছে এখানে। ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা গদখালিতে আসেন ফুল ক্রয় করতে। ফুল উৎপাদন ও কেনাবেচায় শত-শত কোটি টাকার লেনদেন হয় বছরে।

যশোর শহর থেকে পশ্চিমের উপজেলা ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার ৭৫টি গ্রামের প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয় হরেক রকমের ফুল। ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার গ্রামগুলোর রাস্তার দুইপাশে দিগন্ত বিস্তৃত জমিতে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি আর সাদা রঙের ফুলের সমাহার দেখা যায়। প্রতিদিন ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারার শত-শত ফুলচাষির আনাগোনা শুরু হয় গদখালীর বাজারে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছোট-বড় পাইকাররাও সেখান থেকে ফুল কিনে নিয়ে যান। এরপর বিভিন্ন হাতবদল হয়ে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার মাধ্যমে ফুল ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে, এমনকি দেশের বাইরেও।

ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের পানিসারা, হাড়িয়া, কৃষ্ণচন্দ্রপুর, পটুয়াপাড়া, সৈয়দপাড়া, মাটিকুমড়া, বাইসা, কাউবা, ফুলিয়া আর শার্শার নাভারণ, উলাশি, গদখালী ও শ্যামলাগাছি গ্রামের প্রায় প্রতিটি মাঠ এখনও ভরা ফুলে। শত-শত হেক্টর জমি নিয়ে গাঁদা, গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, কসমস, ডেইজ জিপসি, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ বিভিন্ন ধরণের ফুলের চাষ রয়েছে এখানে।

করোনা পরিস্থিতি আসার আগে সূর্য ওঠার সঙ্গে-সঙ্গে জমে উঠতো গদখালীর ফুলের বাজার। কিন্তু গত এক বছর ধরে সেই দৃশ্য আর নেই। পুরো বাজার এলাকা যেন জনমানবশূন্য। নেই আগের মতো ফুলের দাম নিয়ে হাঁকডাক। চাষিদের চোখে-মুখে বিষন্নতার ছাপ।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির (বিএফএস) সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, ‘এবার ঝিকরগাছা ও শার্শা উপজেলায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ করেছিলেন। গত বছর করোনার কারণে কেউ ব্যবসা করতে পারেনি। গদখালি অঞ্চলে ৫ হাজার কৃষকের মধ্যে ৫৫ জন সরকারের প্রণোদনা ঋণ পেয়েছে। বাকিরা এনজিও ঋণ ও অনেকে জমি বিক্রি করে সংসার চালিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস ও সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ফুল সেক্টরের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। সেই অবস্থা থেকে এবারের ১৪ ও ১৬ ডিসেম্বর অন্তত ৫০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। যা স্বাভাবিক সময়ে ২ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়ে থাকত।

গদখালী হাড়িয়া গ্রামের ফুল চাষি রহমত গাজী বলেন, ‘আড়াই বিঘা জমিতে গোলাপ ফুলের চাষ করেছিলাম। প্রতিপিস ৪ টাকা করে বিক্রি করেছি। এতে সামন্য লাভ হয়েছে।

যশোর ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম হোসেন পলাশ জানান, ‘উপজেলার গদখালীতে এবার সাড় ৬ হাজার হেক্টর জমি ফুলের আবাদ করা হয়েছে। কিন্তু মহামারি করোনা ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে সব ফুল চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু চলতি মাসে ভালো ফুল বিক্রি হয়েছে বলে জেনেছি।

যশোর আঞ্চলিক কৃষি অফিসের উপ-পরিচারক বাদল চন্দ্র জানান, করোনায় ফুল চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও চলতি মাসে তাদের ভালো ফুল বিক্রি হয়েছে।

সূত্র : বাসস

সান নিউজ/কেটি

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

দেব–শুভশ্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়

দীর্ঘ বিরতির পর সাবেক প্রেমিক জুটি দেব ও শুভশ্রী পর্দায়। কৌশিক গাঙ্গুলীর &lsq...

নির্বাচনের রোডম্যাপ আগামী সপ্তাহে, আশা ইসির

আগামী সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণা করতে পারব...

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কাল

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা করতে আগামীকাল শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ব...

দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী

মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী। পাকিস্তানের বাণ...

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ৫ উপজেলার বহু মানুষ পানিবন্দি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা