বান্দরবানের আলীকদমে পর্যটক নিহতের ঘটনায় অনলাইনভিত্তিক ট্রাভেল গ্রুপ ‘ট্যুর এক্সপার্ট গ্রুপ’-এর অ্যাডমিন বর্ষা ইসলাম বৃষ্টিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পর্যটকদের নিয়ে ক্রিস্টং ও রংরাং পাহাড় ভ্রমণ শেষে আলীকদমে ফিরে আসার পর গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আলীকদম থানার পুলিশ তাঁকে আটক করে। এরপর পাহাড়ি ঢলে নিহত স্মৃতি আক্তারের বাবা হাবিবুর রহমানের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আজ শনিবার সকালে হাবিবুর রহমান স্মৃতি আক্তারের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় বেশ কয়েকজনকে আসামি করে আলীকদম থানায় মামলা করেন। মামলায় নিয়মকানুন অনুসরণ না করে ঝুঁকিপূর্ণ দুর্গম এলাকায় ভ্রমণ আয়োজনের অভিযোগ আনা হয়েছে বর্ষা ইসলামের বিরুদ্ধে। বান্দরবানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পুপার জিনিয়া চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর বর্ষা ইসলাম পুলিশ হেফাজতে ছিলেন। আজ (শনিবার) সকাল ১১টার দিকে নিহত পর্যটক স্মৃতি আক্তারের বাবা বাদী হয়ে মামলা করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত বর্ষা ইসলাম বৃষ্টি (৩২) যশোরের বরিউল ইসলামের মেয়ে হলেও বর্তমানে ঢাকার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার (১১ জুন) বর্ষা ইসলামের নেতৃত্বে ৩৩ জনের একটি পর্যটক দল আলীকদমে যায়। দলের কো-হোস্ট ছিলেন হাসান নামে একজন এবং স্থানীয় গাইড হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সিদ্ধার্থ তঞ্চঙ্গ্যা। তাদের অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল—আলীকদম উপজেলার ক্রিসতং পাহাড়, থানচির লিমান লিবলু এবং সাকাহাফং চূড়া জয় করা।
পর্যটক দলটি পরে দুটি দলে বিভক্ত হয়—একটিতে ২২ জন, অন্যটিতে ১১ জন। তৈন খাল পার হওয়ার সময় ২২ জনের দল থেকে ১৯ জন নিরাপদে পার হন, কিন্তু কো-হোস্ট হাসানসহ তিনজন পানির প্রবল স্রোতে ভেসে যান।
পরদিন (১৩ জুন) ভোরে কানাই মাঝির ঘাটে শেখ জুবাইরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্মৃতি আক্তারের মরদেহ পাওয়া যায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমতলী ঘাট এলাকায়। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন কো-হোস্ট হাসান।
আজ শনিবার সকালে নিহত স্মৃতি আক্তারের বাবা দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ এনে বর্ষা ইসলামের বিরুদ্ধে আলীকদম থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার দেখায়।
সাননিউজ/ইউকে