পেছনে পড়ে গেলেন রাশিদ খান। পাশে এখন আন্দ্রে রাসেল। ঠিক ওপরেই অ্যালেক্স হেলস। নাগালেই আছেন কাইরন পোলার্ড ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ক্রিস গেইল অবশ্য বেশ দূরে। তবে তিনিও আছেন দৃষ্টিসীমাতেই। প্রশ্ন এখন সেটিই, গেইলকে কি ছাড়াতে পারবেন সাকিব আল হাসান?
রেকর্ডটি ম্যান অব দা ম্যাচের। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) রবিবার অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডার হয়ে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস প্যাট্রিয়টসের বিপক্ষে ম্যাচ-সেরা হয়েছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। রেকর্ডের পাতায়ও তিনি এগিয়ে গেছেনে এক ধাপ।
এমনিতে এবারের আসরে চরম দুঃসময় চলছিল সাকিবের। বোলিংয়ের সুযোগ খুব একটা পাচ্ছিলেন না। তিন ম্যাচে বোলিং পেয়েছেন এক ওভার করে, আরেকটি দুই ওভার। চার ম্যাচ মিলিয়ে উইকেট ছিল স্রেফ একটি। ৪৯৮ উইকেট নিয়ে আসর শুরু করা ক্রিকেটারের ৫০০ ছোঁয়ার অপেক্ষা কেবল দীর্ঘতরই হচ্ছিল। ব্যাটিংয়ে ছিলেন স্রেফ নিজের ছায়া হয়ে। প্রতি ম্যাচেই ধুঁকছিলেন ক্রিজে নেমে। সেই আঁধার ফুঁড়ে অবশেষে আলোয় এলেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার।
অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের বিপক্ষে দুই ওভার বোলিং করে উইকেট নেন তিনটি। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে পেরিয়ে যান ৫০০ উইকেট। বিশ্ব ক্রিকেটের প্রথম অলরাউন্ডার হিসেবে স্পর্শ করেন ৭ হাজার রান ও ৫০০ উইকেটের ডাবল। পরে রান তাড়ায় দলের জয়ের পথে ব্যাট হাতে করেন ১৮ বলে ২৫ রান। তাতে ধরা দেয় ম্যাচ-সেরার স্বীকৃতি।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই নিয়ে ৪৪ বার ম্যান অব দা ম্যাচ হলেন সাকিব। স্পর্শ করলেন আন্দ্রে রাসেলকে। ১০৭ ম্যাচ কম খেলেই ছুঁয়ে ফেললেন তিনি ক্যারিবিয়ান গ্রেটকে।সাকিব খেলেছেন ৪৫৭ ম্যাচ, রাসেল ৫৬৪টি।
পেছনে পড়ে যাওয়া রাশিদ খান ও শোয়েব মালিককেও ছাড়িয়ে গেলেন সাকিব কম ম্যাচ খেলেই। আফগান লেগ স্পিন তারকা রাশিদ ৪৩ বার সেরা হয়েছেন ৪৮৭ ম্যাচ খেলে, পাকিস্তানি অলরাউন্ডার মালিক ৪৩ বার সেরা হয়েছেন ৫৫৭ ম্যাচ খেলে।
সাকিবের ঠিক ওপরেই এখন অ্যালেক্স হেলস। ৫০৬ ম্যাচ খেলে ৪৫ বার সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান। ৭১০ ম্যাচ খেলে ৪৭ বার সেরা হয়েছেন কাইরন পোলার্ড।
হেলস ও পোলার্ড খেলছেন এই সিপিএলে। ম্যাচ-সেরার রেকর্ডে নিজেদের আরও এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ তাদের আছে।
৪৮৬ ম্যাচ খেলে ৪৮ বার সেরা হয়ে রেকর্ডের দুইয়ে আছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তিনিও খেলে যাচ্ছেন এবং এই কীর্তিতে নিজেকে এগিয়ে নেওয়ার লড়াই চালিয়ে যাবেন।
ক্রিস গেইলের ক্যারিয়ার শেষ। তবে আপাতত সবাইকে ছাড়িয়ে বেশ কিছুটা এগিয়ে ‘ইউনিভার্স বস’। তবে তিনি যে টি-টোয়েন্টির অবিসংবাদিত সম্রাট, সেটি ফুটে ওঠে এই রেকর্ডেও। ৬০ বার ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন তিনি ৪৬৩ ম্যাচ খেলেই।
পোলার্ড এখন ক্যারিয়ারের যে পর্যায়ে আছেন, তার জন্য গেইলকে ছোঁয়া আর সম্ভব নয় বলেই ধরে নেওয়া যায়। তবে ম্যাক্সওয়েল-সাকিবদের সামনে সেই হাতছানি আছে।সময়ই বলবে, তারা সেটি পারেন কি না।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে অনুমিতভাবেই সাকিবের ত্রিসীমানায় নেই কেউ। ২৩ বার করে সেরা হয়ে যৌথভাবে দুইয়ে মাহমুদউল্লাহ ও তামিম ইকবাল, ১৭ বার সেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম, ১৪ বার শেখ মেহেদি হাসান, ১২ বার লিটন কুমার দাস।