জাতীয়

কারও সন্তান যেন নিরপরাধে জেল না খাটে

সান নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথমে সামনে আসে তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার নাম। নিখোঁজ হওয়ার আগে পরিচিতজনদের মধ্যে সবশেষ তার সঙ্গে ছিলেন ফারদিন। সন্দেহভাজন হিসেবে ১০ নভেম্বর মামলার পরপরই গ্রেফতার হন বুশরা।

আরও পড়ুন: তুরস্কে রেস্তোরাঁয় বিস্ফোরণ, নিহত ৭

এর এক মাসেরও বেশি সময় পর ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ ও র‌্যাব জানায়, ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন, এর সঙ্গে বুশরার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বুশরার আইনজীবী এরই মধ্যে তার জামিন আবেদন করেছেন। আদালত শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন ৫ জানুয়ারি।

বুশরার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বুশরা গ্রেফতার হওয়ার পরে অনেকে অনেক মন্তব্য করেছেন। তাদের বেশিরভাগই বাজে মন্তব্য করেছেন ঘটনা না জেনে অনুমানে। কষ্টটা এ জায়গায়ই। কিছুটা দেরি হলেও আমার মেয়েটা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে, এটাই এখন শান্তি। এর বাইরে আপাতত কিছু বলতে চাই না। আমার মেয়ের মতো আর কারও সন্তান যেন নিরপরাধে জেল না খাটে।

বুশরার চাচা মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, সত্যটা এরই মধ্যে জনগণ জানতে পেরেছে। বুশরা নির্দোষ হয়েও এখনো কারাগারে। এটা কি ন্যায়বিচারের অবমাননা নয়?

আরও পড়ুন: শোকবার্তায় মোদীকে শেখ হাসিনা মায়ের প্রতি আপনার শ্রদ্ধা অনুকরণীয়

বুশরার আইনজীবী ঢাকা বারের সাবেক সিনিয়র এজিএস এ কে এম হাবিবুর রহমান চুন্নু গণমাধ্যমকে বলেন, বুশরার জামিনের জন্য ৫ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করা আছে। বুশরার সঙ্গে সবশেষ দেখা হওয়ার পরেই ফারদিন মারা যান। সঙ্গত কারণেই বুশরার বিরুদ্ধে একটা চার্জ আসে। আইনের ব্যাপারে ইমোশনের কোনো জায়গা নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে।

জানা যায়, গত ৪ নভেম্বর রাতে বুশরাকে রামপুরায় নামিয়ে দেওয়ার পর ফারদিনের সঙ্গে বুশরার একবারই মেসেজের মাধ্যমে কথা হয়েছিল। বুশরা জানতে চেয়েছিলেন, ফারদিন বাসায় পৌঁছেছে কি না। এর উত্তরে ফারদিন শুধু উত্তর দিয়েছিলেন ‘ইয়েস’।

ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের তিনদিনের মাথায় ১০ নভেম্বর রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমাতুল্লাহ বুশরার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা ও পরিকল্পিতভাবে মরদেহ গোপন করার অভিযোগ এনে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা কাজী নুরউদ্দিন রানা।

আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৩৪

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ফারদিন হত্যায় বুশরার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে কি না, এমন প্রশ্নে গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদ সে সময় গণমাধ্যমকে বলেন, নেগেটিভ।

জিজ্ঞাসাবাদে বুশরার সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য না পেলেও গত ১৬ নভেম্বর বুশরাকে আদালতে পাঠিয়ে তাকে কারাগারে রাখার আবেদন জানান মামলার তদন্তকারী ডিবি পরিদর্শক মজিবুর রহমান।

আবেদনে তিনি লেখেন, বুশরাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পেয়ে উচ্চ আদালতের নিয়ম মেনে সতর্কতার সঙ্গে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রিমান্ডে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে তদন্ত কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ পলাতক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখার আবেদন জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন: শনিবার কোথায় কখন লোডশেডিং

সে সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন জানালেও ঢাকা মহানগর হাকিম আতাউল্লাহর আদালতে শুনানি শেষে তা নাকচ করে বুশরাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে ফারদিনের সঙ্গে বুশরার পরিচয় হয়েছিল উল্লেখ করে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, এর বাইরে তাদের মধ্যে অন্য কোনো সম্পর্ক ছিল না। বুশরার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। ফারদিনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে সবার মতো আমরাও মর্মাহত।

নিয়মানুযায়ী, অপরাধের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করার পূর্বশর্ত হলো সুচারুভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। একই সঙ্গে নির্ভুল তথ্য সম্বলিত মামলা দায়ের করাও জরুরি।

তবে প্রায়ই দেখা যায়, কোনো অভিযোগ দায়েরের পর গ্রহণযোগ্য তথ্য-উপাত্ত ছাড়া সন্দেহবশত অনেককে গ্রেফতার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মামলার তদন্ত চলাকালেও অভিযুক্তদের ছবিসহ প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর ব্যতিক্রম হয়নি বুশরার ক্ষেত্রেও। মামলা দায়েরের আগে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সেখানে তার কাছে কোনো ধরনের তথ্য পাওয়া যায়নি বলে গণমাধ্যমকে বারবার নিশ্চিত করা হয়।

আরও পড়ুন: রাজ-পরীমনির বিবাহবিচ্ছেদ!

প্রসঙ্গত, র‌্যাব-ডিবির তদন্তে সন্তুষ্ট বুয়েট শিক্ষার্থীরা মামলার তদন্তের অগ্রগতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ও নিহত ফারদিন নূর পরশের সহপাঠীরা।

সান নিউজ/এসআই

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

 রাশিয়ার দুই হেলিকপ্টার কিনে বিপাকে বাংলাদেশ

রাশিয়ার কাছ থেকে দুটি হেলিকপ্টার কিনেছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়...

৭৮ অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির সুপারিশ

পদোন্নতি বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাগণের আবেদনের দ্বিতীয় পর্যায়ের প...

১০ সেপ্টেম্বর ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ করা হবে: ইসি

আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)...

ডাকসুতে কাদের-বাকেরের নেতৃত্বে ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশ নিতে প্যানেল ঘো...

ইতিহাস গড়লেন মোহামেদ সালাহ

লিভারপুলকে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জেতানোর পর মিশরীয় এই ফরোয়ার্ড তৃতীয়বারের মতো...

ইউক্রেনে এক রাতে ৬০০’র বেশি ড্রোন-মিসাইল হামলা চালাল রাশিয়া

রাশিয়া এক রাতে ইউক্রেনের দিকে ৫৭৪টি ড্রোন ও ৪০টি মিসাইল ছুড়েছে—যা সাম্প...

‘১% মিডিলম্যান, ৫% মিনিস্ট্রির’

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রেস সেক্রেটারির বিরুদ...

ভাত না জোটার দেশে হাঁসের মাংসবিলাস শোভনীয় নয়: আলাল

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক এমপি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, দুই...

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিলের রায় ৪ সেপ্টেম্বর

আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা মামলার সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে...

রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ অনুমোদন

‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নীতিগত...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা