নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর হাতিরঝিলে লেখা-পড়ার জন্য বকা দেয়ায় মায়ের সাথে অভিমান করে নওরীন জাহান ঝিলিক (১৮) নামের এক কলেজছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর দুইটায় হাতিরঝিল থানার মগবাজারের গাবতলা এলাকায় নিজ ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ঝিলিক তেজগাঁয়ের হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ঢাকার নবাবগঞ্জের মৃত অ্যাডভোকেট মৃত এডভোকেট রাহাদ উল্লাহর মেয়ে। ঝিলিক মগবাজারের গাবতলা এলাকার নিজ ফ্ল্যাটে পরিবারের সাথে থাকতেন। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে বড় ছিলেন তিনি।
হাসপাতালে নিয়ে আসা ঝিলিকের জমজ বোন নুসরাত জাহান রিতা বলেন, আমি ঝিলিকের সঙ্গে কথা বলে প্রাইভেট পড়তে যাই। হঠাৎ বাসার সাবলেটের ভাড়াটিয়া ফোন দিয়ে বলে ঝিলিক দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। তার কোনও সারা শব্দ পাচ্ছি না। পরে বাসায় এসে তাদের সহযোগিতায় রুম খুলে দেখি ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছে ঝিলিক।
তিনি আরও জানান, ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত ঝিলিককে সেখান থেকে নামিয়ে প্রথমে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে পৌনে চারটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নুসরাত জাহান রিতা জানান, আম্মা সাভার নানার বাসায় যাওয়ার আগে ঝিলিককে পড়ালেখা নিয়ে রাগারাগি করেছিলেন। তাদের ধারণা লেখাপড়ার জন্য মা বকা দেয়ায় অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই বলেও জানান তিনি।
মৃত্যুর খবর শুনে ছুটে আসেন ঝিলিকের মা মমতাজ বেগম। তিনি কান্না জর্জরিত সুরে বলেন, আমাকে ছেড়ে কেন চলে গেলে মা, তোমার বাবা গত ছয় মাস আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। আমি তোমাদেরকে বুকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চেয়েছিলাম। আজ তুমি আমার বুক ছেড়ে চলে গেলে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক এসআই ইদ্রিস আলী। তিনি জানান, ট্রিপল নাইনে (৯৯৯) খবর পেয়েছি, ওই শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়েছেন। পরে সেখান থেকে স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন।
পরিবারের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি আত্মহত্যা করেছে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলেও মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে বলেও জানান তিনি।
সান নিউজ/এমকেএইচ